সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল সরবরাহের টেন্ডারে চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে খোদ সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে। সিভিল সার্জন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একটি বিশেষ কোম্পানিকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এ কাজে সিভিল সার্জনের যোগ্য সহযোগী হচ্ছেন তার হিসাব রক্ষক ইতিপূর্বে দুর্নীতি মামলায় দুদকের হাতে আটক হওয়া আনোয়ার হোসেন।
টেন্ডার জমা দেওয়া কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানান, ২০১৭-১৮ অর্থ বৎসরের জন্য সিএস / সাত/শা- ২/২০১৭-১৮/ ২৩০৩/১৫ স্মারকে ২৯ সেপ্টেম্বর’ ১৭ তারিখে আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল সরবারহের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে ১২ অক্টোবর দুপুর ১২টা তার মধ্যে সিডিউল বিক্রয় এবং ১৫ অক্টোবর সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে সিডিউল জমা এবং ওই দিন সাড়ে ১২টায় টেন্ডার দরদাতাদের সামনে দরপত্র বক্স খোলা হবে। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে সিডিউল বিক্রিয়ের কথা থাকলেও সিডিউল বিক্রিয় করা হয়েছে বিক্রিয়ের শেষ দিন ১২ অক্টোবর’ ১৭। এছাড়া ১৫ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১২টায় দরদাতাদের উপস্থিতিতে দরপত্র উন্মুক্ত করে দরদাতাদের দরপ্রস্তাব জানানোর কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হয়নি এবং কোন রকম সিলগালা ছাড়াই উক্ত দরপত্র অফিস হেফাজতে নেয় কর্তৃপক্ষ। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বর্হিভূত ও গোপনীয়তার পরিপন্থী। সেসময় সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এখন জানালে ঝামেলা আছে। আগামী ২৫ তারিখে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এটি জানানো হবে।
ঠিকাদারদের অবিযোগÑ সিভিল সার্জন তার পছন্দের কোম্পানির কাছ থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। যে কারণে অন্য দরতাদাতের রেট দেখে তার পছন্দের কোম্পানিকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার জন্য এধরনের নিয়ম বর্হিভূত কাজ করেছেন। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব রক্ষক আনোয়ার হোসেন। ইতোপূর্বে গত রোজার ঈদের কয়েকদিন আগে বিশেষ একটি কোম্পানিকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার জন্য অন্যান্য কোম্পানিকে সিডিউল দেননি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে অন্যান্য কোম্পানির বিক্ষোভের কারণে উক্ত টেন্ডার বাতিল হয়। যার তদন্তও শুরু হয়েছে।
ওই হিসাব রক্ষক আনোয়ার দুর্নীতির কারণে দুদকের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। এছাড়াও আনোয়ারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
টেন্ডার দাতা পিমা এসোসিয়েট লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, “আমরা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় টেন্ডার জমা দিয়ে থাকি। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সময়ের পর দরপত্র উন্মুক্ত করে সকল দরদাতাদের সামনে দর প্রস্তাব জানাতে হবে। কিন্তু সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস তার ব্যতিক্রম করেছেন। যেটি সম্পূর্ণ নিয়ম বর্হিভূত। আমি তাদের অপসারণ এবং স্বচ্ছ টেন্ডার দাবি করছি।
সিভিল সার্জন ডা: তৌহিদুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতিবাজ হিসাবরক্ষক আনোয়ারের অপসারণ এবং উক্ত টেন্ডারটি স্বচ্ছপ্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত করার আহ্বান জানান দরদাতারা।
এঘটনায় সিভিল সার্জন ডা: তৌহিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “দূরে অবস্থান করে এধরনের কথা বললে হবে না। সব কিছুই নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। সীল গালাও করা হয়েছে এবং সকলের সামনে দরপ্রস্তাব জানানো হয়েছে।” সকলের সামনে দরপ্রস্তাব জানানো হলে কেউ কেন কিছই জানেন নাÑ এমন প্রশ্নের তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি। অন্যদিকে ঠিকাদাররা বলছেন তারা বারবার যথাসময়ে দর প্রস্তাব জানানোর অনুরোধ জানালেও তাতে কর্ণপাত করেনি কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে এটা সিভিল সার্জনের নির্লজ্জ মিথ্যাচারিতা ছাড়া কিছুই নয়। তারা বলছেন তারা এখনও জানেন না ঠিকাদাররা ক কি দরপ্রস্তাব করেছেন। অথচ সিভিল সার্জন বলছেন তারা প্রকাশ করা হয়েছে।
Check Also
সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সহসভাপতি হলেন জামায়াতের এড আবু বক্কর
সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ দীর্ঘ সময়ের অচলাবস্থার পর উৎসবমুখর পরিবেশে সর্বোচ্চ ভোটারদের উপস্থিতিতে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির …