পাঁচ দফা প্রস্তাবেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপিত পাঁচ দফা প্রস্তাবের মাধ্যমেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে।

সোমবার তার (প্রধানমন্ত্রীর) ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণকালে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না… আমরা বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক-বিএবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার কার্যালয়ে অনুদানের চেক হস্তান্তর করে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যে ৫ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন সেগুলো হচ্ছে-১. মিয়ানমারকে অবশ্যই বিনা শর্তে রাখাইন রাজ্যে দ্রুত ও চিরতরে সহিংসতা এবং জাতিগত নিধন বন্ধ করতে হবে।
২. জাতিসংঘ মহাসচিবকে দ্রুত মিয়ানমারে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. ধর্ম ও জাতি নির্বিশেষে মিয়ানমারের সব নাগরিকের সুরক্ষা দিতে হবে। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তুলতে হবে।
৪. বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. কফি আনান কমিশন রিপোর্টের সুপারিশ অবশ্যই বিনা শর্তে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার চার লাখ রোহিঙ্গার বোঝা বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে বহন করছে। সরকার মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মানবিক বিপর্যয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকের দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের বিপর্যয়ের সময় আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতাম তবে তা অমানবিক হতো।’

দুস্থ মানবতার সহায়তায় এগিয়ে আসায় বিএবি’কে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অ্যাসোসিয়েশন মানব কল্যাণে সব সময়ই তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা সাম্প্রতিক বন্যার সময়ও জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। আজ তারা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।

নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সর্বশ্রেণির মানুষের এগিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষ মানবতাবোধসম্পন্ন। তারা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সহায়তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসামরিক প্রশাসন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং তার দলের স্বেচ্ছাসেবকরা এসব নিপীড়িত মানুষের ভোগান্তি লাঘবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে তাদের জন্য বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

Check Also

পরপর পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় দেশজুড়ে নতুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি

(২৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের আগে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকায় সচিব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।