সিইসি’র পদত্যাগ চাইলেন কাদের সিদ্দিকী

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠাতা বলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার পদত্যাগ চেয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ প্রেসিডেন্ট বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি সিইসি’র সমালোচনা করে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে বক্তব্যে তিনি সিইসি’র সমালোচনা করেন। সিইসি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে দলটির পক্ষ থেকে ২০ জন সিনিয়র নেতা অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রীও।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে ১৮টি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে দলটি। একে একে সবাই বক্তব্যও দেন। বক্তব্য রাখেন কমিশনারসহ ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালু্দ্দীন আহমদ। পরে কাদের সিদ্দিকী বক্তব্য শুরু করেন।

এর আগের দিন রোববার সিইসি বিএনপির সঙ্গে মতবিনিময় সভার শুরুতে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় ভালো ভালো কাজ করেছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন।

মতবিনিময় সভা শেষে কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা বলায় সিইসি’র কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। সিইসি বলেন, বিএনপির ওয়েবসাইট থেকে তিনি এ তথ্য পেয়েছেন। এর জবাবে আমি বলেছি, এই তথ্য কি যাচাই বাছাই করেছেন? আর এ বক্তব্য দেয়ার আগে কি অন্য কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন? সিইসি জবাব দিয়েছেন, অন্য কমিশনারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। এরপর আমি জানতে চেয়েছি, জিয়াউর রহমান যদি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা হন তাহলে বঙ্গবন্ধু কি গণগন্ত্র হত্যা করেছিলেন? এসব বলা সিইসির ঠিক হয়নি। তাই আমরা মতবিনিময় সভা বয়কট করলাম।

কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, যদি জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে থাকে তাহলে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে কেউ না কেউ হত্যা করেছে। সেই হত্যা করা, বাতিল করা, স্থগিত করা বা নির্বাসনে দেয়া গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে জিয়াউর রহমান। তার (সিইসি) এই বক্তব্যের সাথে আমরা একমত না। সিইসি একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। তিনি এ কথা বলতে পারেন না যে, জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন আর শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। তাই আমি মনে করি, সিইসি’র এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। তিনি একটা অত্যন্ত কঠিন বেহিসাবি কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, দেশে যে লড়াই চলছে, সেটি গণতন্ত্রের লড়াই। সে লড়াই মানুষের অধিকারের লড়াই। সেই জন্য আমাদেরকে ডাকা। এই আলোচনায় আমরা অংশগ্রহণ করলেও সেটাকে আমরা স্বীকার করতে পারছি না।

১৮ অক্টোবর বেলা ১১টায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি। ১৯ অক্টোবর বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টি (জেপি) ও বিকেল ৩টায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।

অন্যদিকে ২২ অক্টোবর বেলা ১১টায় অরাজনৈতিক সংগঠন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, ২৩ অক্টোবর বেলা ১১টায় নারী নেত্রী এবং ২৪ অক্টোবর বেলা ১১টায় নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি।

চলতি বছরের জুলাইয়ে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ইসি। পরবর্তীতে ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু হয়েছ

Check Also

ট্রাইব্যুনালে আ.লীগ নেতাদের বিচার দেখতে এসে যা বললেন সাঈদী পুত্র

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।