শাহজালাল শাহেদ : শান্তিতে নোবেল পাওয়া সু চির রাজ্যে দমন-পীড়নের পাশাপাশি এবার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী উগ্রপন্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উস্কে দিয়েছে বর্মী প্রশাসন। আরাকানে মুসলমান নামের অস্থিত্বের বিলুপ্তি ঘটাতে উঠেপড়ে লেগেছে সেদেশের উগ্রপন্থীদের কট্টর অনুসারিরা। বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে তাদেরই সমর্থিত ও মদদপুষ্ট নতুন নতুন কথিত রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। মুসলমানদের পিছু লেলিয়ে দেয়া ওইসব কথিত সংগঠনের নেতাকর্মীরা জায়গায় জায়গায় সম্প্রতি গঠিত সশস্ত্র সংগঠন নাডালা বাহিনীর সহযোগিতায় ব্যানার ফেস্টুন লিফলেট বিতরণ করছে। এসব অমানবিক ন্যক্কারজনক কর্মকান্ডের পরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবস্থান করা রোহিঙ্গা মুসলমানদের মাঝে ভীতি ছড়াতে তাদের কাছেও পৌঁছে দিচ্ছে মুসলমান বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচির উপকরণ।
সূত্রে জানা গেছে, পুরো আরাকান রাজ্য জুড়ে রোহিঙ্গা বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে মগ ও রাখাইন বৌদ্ধরা। বিক্ষোভ আহবানকারী সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই উগ্রপন্থীদের অনুসারি। আচরণগতভাবে এসব উগ্রপন্থীরা মারমুখি নীতি অবলম্বন করে চলেছে। এরাই আগামী ২২অক্টোবর রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের জন্য লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার-ফেস্টুন তৈরি করেছে। আর এসব কার্যক্রমে রাখাইন সমর্থিত রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতারা বিরাট অংকের অর্থের যোগান দিচ্ছে। কাল রোববারের রোহিঙ্গা বিরোধী কর্মসূচিতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সশস্ত্র সংগঠন নাইন সিক্স নাইন ও মা-বাথা প্রত্যক্ষ সমর্থন এবং বর্মী সামরিক বাহিনীর পরোক্ষ মদদ রয়েছে।
কর্মসূচি সংক্রান্ত বিলিকৃত লিফলেটে সূত্রটি প্রতীয়মান করেছে, সরকারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আরো কঠোরতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে রাখাইন সংগঠনগুলো। বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের বাঙ্গালী আখ্যা দিয়ে, তাদের ফেরত না আনার জন্য দাবি করছে রাখাইনরা। একই সাথে রাজ্যের সকল রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার দাবিও লেখা আছে ওই লিফলেটসমূহে।
এদিকে রোহিঙ্গাদেরকে বাঙ্গালী সন্ত্রাসী বর্ণনা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সকল রাখাইন ও অন্যান্য সম্প্রদায়কে ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজক সংগঠনগুলো। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ওআইসিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা না বলতেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন সম্প্রদায়ের উগ্রপন্থীরা।