দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজেও হোয়াইট ওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের দেয়া ৩৭০ রানের বিশাল টার্গেটের জবাবে খেলতে নেমে ১৬৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
সাকিব ৬৩ ও সাব্বির ৩৯ ছাড়া কেউই নিজেদের নৈপুন্য দেখাতে পারেননি।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় মাত্র ৩ রানেই ফিরে যান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস। দক্ষিণ আফ্রিকা উদ্বোধনী জুটিতে ১১৯ রান করেছিল।
চতুর্থ ওভারে দলীয় ১৫ রানে বিদায় নেন লিটন দাস। পঞ্চম ওভারে দলীয় ২০ রানে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। তারপর উইকেটে হাল ধরেন মুশফিক-সাকিব। পুরো বাংলাদেশ যখন তাদের একটি বড় জুটির আশা করছিল তখনই হতাশ করলেন মুশফিক। দলীয় ৫১ রানে ব্যক্তিগত মাত্র ৮ রানে বিদায় নেন টেস্ট অধিনায়ক। ১৬তম ওভারে দলীয় ৬১ রানে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২)। দলীয় ৬১ রানে টপ অর্ডারের ৫ উইকেট পতনের পর এ ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গেছে। তবে সাকিব আল হাসান ৬৩ রান করে সাজঘরে ফেরার পর খেলার আকর্ষণ আরও ধূসর হয়ে যায়। আর সাব্বিরের ব্যাটিং দর্শকদের কিছুটা হলেও পুলকিত করেছিল। কিন্তু তিনিও আর বেশিদূর এগুতে পারেননি। দলীয় ১৩৫ রানে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে বিদায় নেন এ মারকুটে ব্যাটসম্যান।
এর আগে ইস্ট লন্ডন মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের বিপক্ষে ৩৬৯ রানের বিশাল স্কোর সংগ্রহ করে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
উদ্বোধনী জুটিতে ১১৯ রান তুলে টাইগারদের দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ান কুইন্টন ডি কক ও টিম্বা বাভুমা। কিন্তু অফফর্ম নাসিরের জায়গায় খেলার সুযোগ পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ প্রোটিয়া শিবিরে জোড়া আঘাত করে কিছুটা স্বস্তি এনেছিলেন। দুই ওপেনারই বধ হয়েছিল তার মায়াবী স্পিনে। কিন্তু অন্য বোলারদের ব্যর্থতায় আবার দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন ডু প্লেসিস ও মারক্রাম।
মিরাজের বলে প্রথম বিদায় নেয়া বাভুমা মাত্র দুই রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন। ৪৭ বলে ৪৮ রান করে এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে লিটন দাসের তালুবন্দি হন। এরপর ৬৮ বলে ৭৩ রান করা ডি কক লেগ সাইটে খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন। ব্যাটের কানায় লেগে বল আকাশে উঠে যায়। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরেন মিরাজ।
এরপর তৃতীয় উইকেটে ১৫১ রান যোগ করে অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস ও এইডেন মারক্রাম জুটি। কিন্তু ইনজুরির কবলে পড়ে মাঠ ছাড়েন ডু প্লেসিস। ৬৭ বলে ৯১ রান করে রিটায়ার্ট হার্ট হন স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার দলনেতা। কিছুক্ষণ পরই দারুণ এক থ্রুতে মারক্রামকে (৬৬) রানআউট করেন ইমরুল কায়েস।
৪৬তম ওভারে ভিলিয়ার্সকে ফিরিয়ে দেন রুবেল। ৪৭তম ওভার করতে এসে তাসকিন মুলদার ও পিলোকাউকে ফিরিয়ে দেন। এ সময় রানের গতি অনেকটাই শ্লথ হয়ে যায়। কিন্তু শেষদিকে ফারহান বেহারডিন ও কাগিসো রাবাদার দারুণ কিছু শটে ৩৬৯ রানের বিশাল স্কোর সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রসঙ্গত, তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ২-০-তে এগিয়ে রয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে টেস্ট সিরিজেও ২-০-তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা।
আর পুরো সিরিজেই ইনজুরিতে জর্জরিত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ইনজুরির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজই শেষ হয়ে গেছে ওপেনার তামিম ইকবাল ও পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের। তামিম ইকবালের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। অন্যদিকে নাসিরের পরিবর্তে ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।