ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:: বিশ্বাসঃসাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরা সহ দক্ষিণাঞ্চলে শীত আসতে শুরু করেছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির পর এবার উত্তরের বাতাশ বয়তে শুরু করেছে। দিন ছোট ও রাত বড় হওয়ার কারণে শীত নামতে শুরু করেছে।
দুর্বাঘাসের মাথায় শিশির বিন্দু ও সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীতের আগমনি বার্তা। পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল হলেও আমাদের দেশে শীত শুরু হয় কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে। সে অনুযায়ী প্রকৃতির নিয়মে সাতক্ষীরাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। বিকেল থেকে শীতল হাওয়া আর সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে ভোরের হালকা কুয়াশায় সকালের সূর্য উঠার পর দীর্ঘসময় পর্যন্ত গাছ গাছালিতে জমে থাকা শিশির বিন্দু বলে দিচ্ছে শীত এসেছে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে দিনভর আকাশ ছিল মেঘলাচ্ছন্ন। দেখলে মনে হয় গোটা দক্ষিণাঞ্চলে পুরো শীত মৌসুম চলছে।
শীত মানে অনেকের কাছে আনন্দের। আর কারও কাছে যন্ত্রণার। তবে বেশিরভাগ মানুষ শীত মৌসুমকেই পছন্দের সময় হিসেবে গন্য করেন। শীতের সময় ভ্রমন প্রেমিরা বিভিন্ন জেলার পর্যটন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে থাকেন। তবে শীত মানে ভাপা পিঠার সু-মধুর গন্ধ। শীত মানে সকালে মিষ্টি খেজুর রসের সাথে মিতালী। শীতের সময় যতোসব রুচিশীল খাবারের আয়োজন চলে গ্রাম কিংবা শহরে। গত কয়েকদিন থেকে দক্ষিণাঞ্চলে সকালে কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে গ্রাম বা শহরের রাস্তা-ঘাট। সকালে তাপমাত্রা কম থাকার কারণে অনুভূত হচ্ছে শীত। বিশেষ করে কার্তিক মাস পড়ার পর থেকে কুয়াশা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোরে দুর্বাঘাসের মাথায় শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। তাই সবখানেই শীতের আমেজ বইতে শুরু করেছে। সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন থেকে সকাল ও সন্ধ্যায় বাতাসের তাপমাত্রা কমে আসায় সকালের দিকে শীত অনুভূত হচ্ছে। ভোর রাতের দিকে গরম কাপড় গায়ে জড়াতে হচ্ছে লোকজনদের। এতে করে সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বিশেষ করে বৃদ্ধদের নিয়ে বিপাকে পরেছেন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে সর্দি জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঋতু বৈচিত্রের কারনে এ জনপদের প্রকৃতিতে আগাম শীতের আগমন ঘটেছে।
আগাম শীতে লেপ-তোষক বানানোর ধুম। শীত মৌসুমের শুরুতে গ্রামগঞ্জে ঘুরে গৃহস্থের চাহিদা অনুযায়ী লেপ ও তোষক বানানোর কাজ করছেন মৌসুমী কারিগররা। বর্তমানে একটি লেপ বানাতে খরচ নেয়া হচ্ছে ১১০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা জানান, কাপড়, সুতা এবং তুলার দাম বেশি হওয়ায় খরচ আগের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধুনকররা জানান, এটি একটি মৌসুমী ব্যবসা। সারাবছর তাদের প্রায় অলস সময় কাটাতে হয়। শীতের সময় কয়েক মাস তাদের ব্যবসা ভালো হয়। শীতের প্রকব যতো বেশি বৃদ্ধি পাবে তাদের কাজও ততো বেশি বেড়ে যাবে।
খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। কোমরে মোটা রশি বেঁধে হাতে হাসুয়া দিয়ে গাছে উঠেন গাছিরা। রস ও গুড় পেতে বেশ আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে গাছিদের। তখন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষকে ঘিরে গ্রামবাংলার কৃষকের ঘরে ঘরে খেজুর রস, গুড়, আমন ধানের পিঠাপুলি নিয়ে চলবে নানান রকম উৎসব।
খেজুরের গাছগুলিতে ভাঁড় ঝুলানো শুরু করেছেন গাছিরা। যদিও তারা বলছেন, শিত বেশি পড়ছে না বলে রসও ভাঁড়ে খুব একটা উঠছে না। আর রসের ভাঁড় না ভড়া পর্যন্ত চলছে তাদের অপেক্ষার পালা । ইটভাটায় জ্বালানির দাপটে খেজুর গাছ কেটে অনেকটাই সাবাড় হয়ে গেলেও যা আছে, সাতক্ষীরা অঞ্চলের মানুষকে তা খুশি করার পক্ষে কম নয়।