মোঃ রিয়াজুল ইসলাম;নাটোর প্রতিনিধি:নাটোরে কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা অবৈধ সোঁতি জাল দিয়ে মাছ ধরা। সিংড়ায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই বিভিন্ন নদীর মুখে ও চলনবিলের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে ছোট-বড় সব ধরণের মৎস্য নিধনের মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। পানির প্রবাহ মুখে সোঁতি জালের জন্য তৈরী করা বাঁধের কারণে নদী পাড়ের সাধারন মানুষের বসতভিটা ও ফসলি জমি ভেঙ্গে পানিতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও চাষাবাদে সেচের পানি নিয়ে কৃষকদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নির্বিচারে মা মাছ মাছ থেকে শুরু করে সব রকমের মাছই নিধন করছে ওই সব প্রভাবশালী মৎস্য শিকারীরা। প্রতিদিন এসব সোঁতি জালে কয়েক মণ করে মাছ ধরা পরে। সোঁতি জালের কারণে পোনা মাছ থেকে শুরু করে কোন মাছই রেহাই পাচ্ছে না। পাশাপাশি পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করায় সেচ সঙ্কটে চলনবিল অঞ্চলের ফসলের আবাদ ব্যাহত হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে উপজেলার আত্রাই নদীর জোড় মল্লিকা, তেলিগ্রাম-সিধাখালী হাঁসপুকুরিয়া, রাখালগাছা, হরিপুর, তাজপুর, চক নঁওগা, খরসতি ও সারদাগরের অসংখ্য পয়েন্টে বাঁশ ও চাটাই দিয়ে পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে সোঁতি জাল বসিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। এছাড়া সিংড়া পৌর এলাকার চরপাটকোল ও নিংগুইনেও এই অবৈধ সৌঁতিজাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে। এর বাইরে আরও বেশ কয়েকটি পয়েন্টে অবৈধ সোঁতি জাল বসানোর জন্য বাঁধ দেওয়ার প্রস্তুতি চলতে দেখা গেছে। আবার কখনও কোথাও কোথাও পানিতে বিষ মিশিয়েও মাছ মারা হচ্ছে। উপজেলা ব্যাপী সোঁতি জাল উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সিংড়ায় এসব অনেক অবৈধ মাছ শিকারীর প্রশাসনের কাছে তাদের নিজেদের জাল জমা দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ওমর আলী জানান, সোঁতি জালের বিরুদ্ধে প্রশাসন সবসময় তৎপর এবং তাদের অভিযানও অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ১০ হাজার মিটার জাল ও ১১টি বাদাই জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া ৩০টি অবৈধ সোঁতিজাল উচ্ছেদ ও ২০টি জাল পুরিয়ে ফেলা এবং ১৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১৩টি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি কলমের ইউপি চেয়ারম্যান মইনুল হক চুনুর হস্তক্ষেপে এসব অনেক মাছ শিকারী তাদের অবৈধ সব জাল উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমাও দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ মাহমুদ জানান, অবৈধ সোঁতিজাল বন্ধ করাটা এটা মৎস্য বিভাগের কাজ। মৎস্য বিভাগ চাইলে তারা তাদের যে কোনো সময় প্রশাসনিক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।