নাটোর প্রতিনিধি :দরিদ্রতা আর নানা অসঙ্গতির সঙ্গে নিত্য লড়াই যেন নিয়তি। তবুও সে হার মানেনি দারিদ্রের কাছে। নানা প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে নিরান্তর সংগ্রাম করেও জীবনে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। সে অনুযায়ী জীবনযুদ্ধে নেমে শত বাধা পেরিয়ে শাম্মী আক্তার দেখিয়েছে বিশেষ কৃতিত্ব। ২০১৭ সালে রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজ থেকে এইসএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু চরম দরিদ্রতা তার সেই স্বপ্নপূরণের পথে বিশাল বাধা। শুধুমাত্র অর্থাভাবে পড়া-লেখা নিয়ে শংকায় রয়েছে সে। শাম্মী আক্তার জানায়, সোমবার মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে উচ্ছ্বসিত হয় সে। সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য চুড়ান্তভাবে মনোনিত হয়েছে । সে এ বছর এম.বি.বি.এস ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে ৩১টি সরকারী মেডেকেল কলেজের ৩৩১৮ টি আসনের মধ্যে মেধা তালিকায় ৮৭১ তম অবস্থানে থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য চুড়ান্তভাবে মনোনিত হয়েছে। লালপুর উপজেলার গৌরিপুর গ্রামের মৃত সোয়েব বেগ ও রেহেনা বেগমেরর কন্যা শাম্মী আক্তার ২০০৯ সালে গৌরীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিসহ পিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ২০১২ সালে গৌরীপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ট্যালেন্টপুল বৃত্তিসহ জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ২০১৫ সালে গৌরীপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে গোন্ডেন এ প্লাসসহ এসএসসি পাশ করে। ২০১৭ সালে রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজ থেকে এইসএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। চার ভাই বোনের মধ্যে সে ছোট। তার বাবা যখন মারা যায় শাম্মী আক্তার তখন ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। বাবার মৃতুতে তাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। তার মা ভাই বোনদের নিয়ে গাভী পালন করে সংসার চালিয়ে পড়াশোনার খরচ চালাত অনেক কষ্ট করে। তার দাদী কয়েক বছর পূর্বে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করে, সেখান থেকে তার ডাক্তারি পড়ার আগ্রহ জাগে। বর্তমানে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো অর্থও জমা নাই শাম্মী আক্তারের পরিবারের কাছে। স্বপ্ন দেখেছিল একদিন ডাক্তার হবে সে। কিন্তু ভর্তির সুযোগ পেয়েও সেই ইচ্ছা পূরণ হবে কিনা সে জানে না। অর্থের অভাবে স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে কি না। সমাজের বিত্তবান ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে হয়তো তার ডাক্তারী পড়াটা হবে এমনটায় বিশ্বাস শাম্মী আক্তারের। সবার নিকট তার একমাত্র চাওয়া আমি যেন শুধু ডাক্তার না হয়ে একজন ভালো মানুষ হতে পারি ও এলাকার মানুষের সেবা করতে পারি।