ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:ফেনী থেকে: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে যাওয়ার পথে ফেনীর বিভিন্ন স্থানে তার গাড়িবহরে হামলাকারীদের পরিচয় মিলেছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপসহ সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবি দেখে হামলাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন স্থানীয়রা।
শনিবার ফেনীর মোহাম্মদ আলী, স্টার লাইন পেট্রোলপাম্প, ফতেহপুর, মহিপাল, লালপুল, মুহুরীগঞ্জসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়। এ সব হামলায় যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- ফেনীর শর্শদী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনী রিয়েল, সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল মোতালেব রবিন, ফেনী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য সবুজ, শর্শদী মিললিয়া মাদ্রাসা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ, ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও যুবলীগ নেতা বেলাল, শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞার গানম্যান যুবলীগ কর্মী সুমন, ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মানিক, কমিশনার কহিনুর, আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী নেতা জিতু, আনন্দপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, শর্শদি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক, বালিগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগ সম্পাদক মোঃ বাবলু, ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন মহিন।
ঘটনার সময় তোলা ছবি, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এবং রিয়েলের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকে শীর্ষনিউজকে বলেন, হামলার মূল দায়িত্বে ছিলেন শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা, ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন সাকা, মোটবী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা হারুন উর রশিদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেন্টু, ডালিম, রবিনসহ আরো প্রায় ৫০/৬০ জন জেলা নেতা।
আহত সাংবাদিকরাও ছবি দেখে হামলাকারী হিসেবে রিয়েল ও সুমনকে চিহ্নিত করেছেন।
রোহিঙ্গাদের দেখতে শনিবার ঢাকা থেকে সড়কপথে কক্সবাজার যাওয়ার সময় ফেনীতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে এ হামলা হয়। রোববার সকালে ফেনী জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায় সাংবাদিক বহরে হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করতে শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে জানান।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। দুপুরে খাবার পর এদের মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হামলার দায়িত্ব দেয়া হয়।
হামলায় একাত্তর টিভি, বৈশাখী টিভি, চ্যানেল আই ও ডিবিসি টিভির গাড়িসহ সাংবাদিক ও বিএনপি নেতাদের বহনকারী অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর করে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা এ সময় সাংবাদিকদের মারধরও করে। এতে পাঁচ সাংবাদিকসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
ফেনী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাঈমুল্লাহ চৌধুরী বরাত জানান, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ক্যাডারেরা ফেনীর ফতেহপুর ও দেবীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। এদেরকে আমরাসহ ফেনীবাসী সবাই চিনে। তারা সবাই চিহ্নিত মুখ। তারা সবাই ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডার বলে সবারই জানা।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, এ নিয়ে কোনো অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।শীর্ষনিউজ