গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ভাতিজির সঙ্গে প্রেম করতে বাঁধা দেয়ায় চাচাকে খুনের ঘটনায় দুই আসামীকে ফাঁসির দন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক এ রায় প্রদান করেন। এছাড়া রায়ে প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।মামলাল অন্য একটি ধারায় হত্যার পর লাশ গোপন করার অপরাধে তাদের উভয়কে আদালত ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাস করে সশ্রম করাদন্ড প্রদান করে।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা হলো- কাপাসিয়ার তরগাঁও মধ্যপাড়া এলাকার মোঃ মোস্তফার ছেলে মোঃ শাকিল (২৩) ও একই থানার তরগাঁও ঋষিপাড়া এলাকার স্বপন চন্দ্র মনিদাসের ছেলে সঞ্জীবন চন্দ্র মনিদাস (২৪)। এ ছাড়া অপর আসামী কাপাসিয়ার পলাশপুর বর্তমান সাং সাফাইশ্রী এলাকার মৃত যোগেশ চন্দ্র মল্লিকের ছেলে ভবতোষ মল্লিক এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি শাকিল ও সঞ্জীবন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক রবিউল ইসলাম জানান, কাপাসিয়া থানার তরগাঁও(ঋষিপাড়া) এলাকার মৃত অর্জুন চন্দ্র মনিদাসের ছেলে উজ্জল চন্দ্র মনিদাস চিনাডুলি বাঘিয়া মোড় বাজারস্থ আতিকুলের গ্রীল ওয়ার্কসপে মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতেন। সে গত ২০১৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর বিকালে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেনি। পরে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে তাকে পাওয়া যায়নি। দুই দিন পর ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে স্থানীয় জুনিয়া নামক স্থানের শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসমান অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে কাপাসিয়া থানা পুলিশ। সংবাদ পেয়ে ওই দিনই উজ্জলের বাবা/মা ও স্বজনরা থানায় গিয়ে উজ্জলের মরদেহ বলে সনাক্ত করে ওই দিনই থানায় মামলা দায়ের করে।। পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে মামলার ওই দুই আসামীকে গ্রেফতার করে।গ্রেফতারকৃতরা পুলিশকে জানায়, উজ্বলের এক ভাতিজির সাথে আসামী সঞ্জীবনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু উজ্বল তাতে বাধা দেয়। একারণে আসামীরা পরিকল্পিতভাবে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে উজ্বলকে গলা কেটে খুন করে শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ ফেলে দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন এসআই মনিরুজ্জামান খান তদন্ত শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানী ও ১৬জন সাক্ষীর সাক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে আদালত এই রায় প্রদান করেন। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট হারিছ উদ্দিন ও আসামী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান আকন।