জামায়াতের আমির মকবুল আহমাদ তিন দিনের রিমান্ডে

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:মতিঝিল থানার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিপক্ষ রিমান্ড আবেদন নাকচ করে জামিন দেয়ার জন্য আবেদন করে। ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসার বিষয়ে কারাবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এ নিয়ে মকবুল আহমাদকে কদমতলী থানার দুই মামলাসহ তিন মামলায় রিমান্ড দেয়া হলো।
গত ৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে মকবুল আহমাদসহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গত ১০ অক্টোবর কদমতলী থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় পাঁচ দিন এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের অপর মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়।
আসামিপক্ষে শুনানিকালে আইনজীবীরা আদালতে বলেন, এ মামলাটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের। এ মামলার ঘটনা সম্পর্কে মকবুল আহমাদ কিছুই জানেন না। তাকে হয়রানি করার জন্য এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি বৃদ্ধ লোক। তাকে রিমান্ডে নিলে অনেক ক্ষতি হবে। তাকে রিমান্ড আবেদন নাকচ করে জামিন দেয়া হোক। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মো: আব্দুর রাজ্জাক, এস এম কামাল উদ্দিনসহ বেশ কিছু আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এসআই জালাল উদ্দিন আদালতে বলেন, আসামি এ মামলার এজাহারনামীয়, তিনি মামলা দায়ের করার পর থেকে পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে গাড়ি ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ বিষয়ে অন্যান্য আসামিকে মদদ ও উসকানি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
জামায়াতের নিন্দা : জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদকে মতিঝিল থানার এক মামলায় জড়িয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, মকবুল আহমাদকে মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে নেয়ার ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তিনি ৯ অক্টোবর গ্রেফতার হওয়ার পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। তার বয়স প্রায় ৮০ বছর। তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে হাজির করা হলে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার সুব্যবস্থা করার জন্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কিন্তু তা আমলে না নিয়ে সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তিনি রিমান্ডে মানসিক চাপের মুখে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েন। আজ তাকে আবারো তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে তার ওপর সরকার চরম জুলুম করছে। দেশের একজন জাতীয় নেতার সাথে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমিরে জামায়াতের স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হলে সরকারকেই তার দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে। রিমান্ড বাতিল করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি।

Check Also

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।