টিভি পর্দার কাজ করা অনেক অভিনয় শিল্পীরই বড় পর্দায় কাজ করার একটা সুপ্ত বাসনা থাকে। অনেকের এ বাসনা পূরণও হয়। কেউ আবার সুযোগ পেলেও চিত্রনায়িকা হয়ে ওঠার সৌভাগ্য ললাটে জোটে না। কারও কাছে একেবারেই অধরা থাকে এটি। এখন নাটকের অনেক অভিনেত্রীই রয়েছেন যারা চিত্রনায়িকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
নাটক, সিনেমা- দুই মাধ্যমে ব্যস্ততার মধ্যেই কাটছে তাদের সময়। তাদের পরিচয় কখনও টিভি অভিনেত্রী, আবার কখনও চলচ্চিত্রের নায়িকা। তবে হিসাবের খাতা উলটালে এর মধ্যে বারবার ব্যর্থ হয়ে এখনও অনেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বপ্ন দেখছেন হয়তো তার ঝুলিতেও একদিন সাফল্য ধরা দেবে।
টিভি পর্দায় কাজের শুরু এমন অভিনেত্রীদের তালিকা করলে প্রথমেই উঠে আসবে জয়া আহসানের নাম। ক্যারিয়ার নাটক দিয়ে শুরু হলেও জয়ার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। পরে দীর্ঘ ৬ বছর পর ‘ডুবসাঁতার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
২০১১ সালে ‘ফিরে এসো বেহুলা’ এবং ‘গেরিলা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার ঝুলিতে আরও রয়েছে ‘চোরাবালি’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’ ওয়ান এবং টু, ‘খাঁচা’।
বর্তমানে অভিনয় করছেন ‘দেবী’ ও ‘বিউটি সার্কাস’ নামের দুটি ছবিতে। নাটক থেকে সিনেমায় এসে জয়া সফল। এখন তো তিনি বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশেই সমানতালে ছবিতে অভিনয় করে যাচ্ছেন। নাটকে এখন আর তাকে দেখা যায় না বললেই চলে।
নাটকের আরেক অভিনেত্রী সোহানা সাবা। তবে মিডিয়াতে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল নাচের মাধ্যমে। পরে নাটকের অভিনেত্রী। এরপর অফট্র্যাকের ছবিতে অভিনয় করে চিত্রনায়িকা পরিচয় পান। অফট্র্যাকের ছবির বাইরে এবার বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হিসেবেও কাজ করছেন। অভিনয় করছেন ‘আব্বাস’ নামের একটি ছবিতে। এতে চিত্রনায়িকা নিরবের প্রেমিকা হিসেবে অভিনয় করছেন তিনি। অফট্র্যাকের ছবি নিয়ে চিত্রনায়িকা হিসেবে পরিচিত হলেও বাণিজ্যিক সফলতাই বলে দেবে তিনি এ ধারার চলচ্চিত্রের জন্য কতটা ফিট।
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে আলোচিত-সমালোচিত ছবি ‘ডুব’। এ ছবিতে বলিউড তারকা ইরফান খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের নুসরাত ইমরোজ তিশা।
এ অভিনেত্রীও কিন্তু টিভি তারকা হিসেবেই দর্শকদের কাছে পরিচিত। টিভিতে তার শুরুটা গান দিয়ে। এরপর নামেন অভিনয়ে। ১৯৯৭ সালে অনন্ত হীরার ‘সাতপেড়ে কাব্য’ নামে একটি নাটকে শিশুশিল্পী হিসেবে শখের বশে অভিনয়ের মাধ্যমে এ জগতে পা রাখেন তিশা। ২০০৩ সাল থেকে অভিনয় ও মডেলিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ‘এঞ্জেল ফোর’ নামের একটি ব্যান্ড দলও গঠন করেছিলেন। এখন তো চলচ্চিত্র নিয়েই ব্যস্ততা যাচ্ছে তার। আগামী ডিসেম্বরে তার অভিনীত ‘হালদা’ ছবিটি মুক্তি পাবে। বাণিজ্যিক ধারার ছবিতে আগেই অভিনয় করেছেন তিশা। কিন্তু সফলতার পাল্লা খুব একটা ভারী নয়।
চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ছুটছেন নাটকের আরেক জনপ্রিয় মুখ মৌসুমী হামিদ। কিন্তু ভাগ্য তার এতটা সহায় হচ্ছে না। তাই বারবার নাটকেই ফিরতে হচ্ছে তাকে। ২০১০-এ লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারে রানার্স আপ হন তিনি। তারপর থেকেই নাটকে অভিনয় শুরু করেন।
২০১৩ সালে এসে নাম লেখান চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে- অনন্য মামুনের ‘ব্লাকমেইল’, সাফি উদ্দিনের ‘ফুল লেনথ লাভ স্টোরি : পার্ট টু’ এবং শামিম আহম্মেদ রনির ‘মেন্টাল’।
কিন্তু সফলতা তার কাছে অধরাই রয়ে গেছে। অন্যদিকে আরেক লাক্স সুপারস্টার জাকিয়া বারি মম খুব চেষ্টা করছেন চিত্রনায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে। কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কিন্তু তার কাছেও সফলতা সোনার হরিণই রয়ে গেল।
আরেক লাক্স সুপারস্টার বিদ্যা সিনহা মিমও সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে নাটকে প্রতিষ্ঠা পান। কিন্তু মননে মগজে সিনেমার প্রতি আকৃষ্ট এ নায়িকার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারও ব্যর্থতা-সফলতার দোলাচালে দুলছে।
অন্যদিকে টিভি পর্দার উপস্থাপক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন আলোচিত নায়িকা নুসরাত ফারিয়া। এখন তো পুরোদস্তুর নায়িকা তিনি। নির্দিষ্ট একটি প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করলেও চিত্রনায়িকা হিসেবে দর্শক সাফল্য তার খুব একটা নেই বললেই চলে।