আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হবে না।
শুক্রবার রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় দলটির নেতারা এসব কথা বলেন।
তারা মনে করেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়। তারা বারবার ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বরের মতো ঘটনা ঘটাতে চায়।
স্মরণসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও অসুস্থতার জন্য তিনি অংশ নেননি।
তার পরিবর্তে সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
সভাপতির বক্তব্যে আগামী নির্বাচন নিয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। তত্ত্বাবধায়ক বা সহায়ক যেটাই বলুন, অন্য কোনো পন্থায় নির্বাচন হবে না।
আমু বলেন, আওয়ামী লীগ যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেছিল, খালেদা জিয়া তখন বলেছিলেন- পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। এখন তিনি কোন মুখে আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করেন?
সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে। আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়ে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে।
‘খালেদা জিয়াকে আদালতের মাধ্যমে হেনস্তা করা হচ্ছে’ খালেদা জিয়া ও বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে মতিয়া চৌধুরী বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ মারেন, আবার হেনস্তার কথাও বলেন। আপনিই তো কোর্টকে হেনস্তা করছেন। ১৪৩ বার সময় নিয়েছেন। সময় নিতে নিতে আপনিই আদালতকে হেনস্তা করছেন। আদালত আপনাকে হেনস্তা করছে না।
বিএনপির সহায়ক সরকারের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, কোনো সহায়ক সরকার হবে না। কোনো ভাবনার সরকার হবে না। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। আপনারা এলে আসবেন, না এলে রাস্তায় গিয়ে চিৎকার করুন। আপনাদের সঙ্গে কোনো কথা হবে না।
তিনি বলেন, এরা ‘৭১-এর, ‘৭৫-এর খুনি। খুনিদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের নয় বলেও মন্তব্য করেন শেখ সেলিম।
বিএনপির আন্দোলনের হুমকির জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জ্বালাও-পোড়াও করলে ছাড় দেয়া হবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার হবে।
বিএনপিকে অপশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি দলের নেতাকর্মীদের সব অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ও সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সাংবাদিক ভাইদের বলছি, লিখে রাখুন। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। ২০১৯ সালে বিজয়ের মাসে এ নির্বাচন হবে।
বিএনপির আন্দোলনের হুমকির জবাবে তিনি বলেন, আন্দোলন করে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ আন্দোলনে চ্যাম্পিয়ন। আমরা মার খেয়ে মাঠে থেকেছি। আর বিএনপি…।
বিএনপিকে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে নাসিম বলেন, যদি সাহস থাকে আগামী নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনের মাঠ থেকে পালাবেন না। দেখব জনগণ কাকে চায়। মিথ্যাচার, মানুষ হত্যা, লুটপাট ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির জন্য জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।