ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:সিরাজগঞ্জ জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী সন্তোষ কুমার কানু’র মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলে প্রতিক কুমার পাপন বিদেশে থেকেই তার সদ্য বিবাহিত মুসলিম প্রেমিকাকে ভাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবশেষে নিখোঁজের ৬দিন পর মেয়েটি কুষ্টিয়া থেকে হয়েছে। সে এখন তার বাবার হেফাজতে রয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি সিরাজগঞ্জ শহরে ‘টক অব দ্যা টাউনে’ পরিনত হয়েছে।
সদর থানার ওসি হেলাল উদ্দিন ও উপ-পরিদর্শক আবু জাফর জানান, ২৮ অক্টোবর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক গাড়ি চালকের সদ্য বিবাহিত মেয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী অর্নাস পরীক্ষা দেয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে সদর থানায় সাধারন ডাইরী করেন।
এরপর মেয়েটির সন্ধানে কললিষ্টের সূত্রধরে জানতে পারি মেয়েটি রাজশাহীর সাহেববাজার এলাকায় অবস্থান করছে এবং মালয়েশিয়ায় ২টি ও সিরাজগঞ্জের কয়েকটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। ৩০ অক্টোবরের পর মেয়েটি রাজশাহী ত্যাগ করে কুষ্টিয়ায় অবস্থান নেয়। এ তথ্যের ভিত্তিতে স্বজনরা ঘটনার ৬দিন পর কুষ্টিয়ায় অবস্থানরত সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের এক সাবেক শিক্ষকের বাড়ি থেকে ২ নভেম্বর মেয়েটিকে উদ্ধার করে গভীর রাতে সিরাজগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। এরপর মেয়েটিকে তার বাবার হেফাজতে দেয়া হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকার অক্সফোর্ড ইন্টার ন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান আকাশ জানান, মালয়েশিয়া প্রবাসী বন্ধু প্রতিক কুমার পাপনের কথা মতো মেয়েটিকে নিয়ে রাজশাহী গিয়েছিলাম। সেখান থেকে যশোর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রেমিক প্রতিকের কাছে মেয়েটির মালয়েশিয়া যাবার কথা ছিল। উভয়ই বন্ধু হওয়ার কারনে এ কাজে সহযোগিতা করেছি। তবে যখন নিজের ভূল বুঝতে পেরেছি, তখন মেয়েটিকে উদ্ধারে সার্বিক সহযোগিতা করেছি।
মেয়েটির বাবা অভিযোগ করে বলেন, সন্তোষ কুমার কানু আমার বন্ধু হওয়ায় তার সাথে আমার পারিবারিক সর্ম্পক ছিল। এই সুযোগে তার বখাটে ছেলে আমার মেয়ের সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলে। বিষয়টি জানার পর ২ মাস আগে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছি। এখনও আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়নি। এ অবস্থায় আবারও আমার বিবাহিত মেয়েকে সে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ভাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। এই প্রতিক একজন বখাটে, ২০১৫ সালে সে ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল, কিছুদিন আগেও সে পতিতাসহ শহরের একটি হোটেল থেকে আটক হয়। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিষয়টি অবগত রয়েছেন। তাদের পরামর্শে ঘটনার বিষয়ে পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী সন্তোষ কুমার কানু বলেন, উভয়ের সাথে প্রেমের সর্ম্পকের বিষয়টি জানার পর সেপ্টেম্বর মাসে ছেলেকে মালয়েশিয়া পাঠিয়ে দেই। এরপর অন্যত্র মেয়েটির বিয়ে হলেও তার স্বামী মেয়েটিকে নির্যাতন করা শুরু করেছিল। যে কারনে বন্ধুত্বের খাতিরে আমার ছেলে ওই মেয়েটিকে সহযোগিতা করার জন্য যোগাযোগ করতে থাকে। পাশাপাশি বিষয়টির সমাধাকল্পে পরামর্শ নেয়ার জন্য কুষ্টিয়ায় অবস্থানরত তাদের সাবেক শিক্ষকের কাছে যেতে বলেছিল। এখানে তাকে বিয়ে বা বিদেশে নিয়ে যাবার কোন বিষয় ছিল না।
এ বিষয়ে রেসরকারী ফার্মে কর্মরত মেয়েটির স্বামী শুক্রবার মোবাইলে জানান, নিখোঁজ হওয়ার পর স্ত্রীকে খুজে পেয়েছি। সে এখন তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছে। এ বিষয়ে আমার অভিভাবকরা যে সিদ্বান্ত নেবে, আমি তাই মেনে নেবো।