কুমিল্লাকে হারিয়ে উড়ছে নাসিরের সিলেট

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:ম্যাচটা খুব সহজেই যেন জিতে যাচ্ছিল সিলেট। ১৪৬ রানের লক্ষ্য উপুল থারাঙ্গা আর আন্দ্রে ফ্লেচার মিলে যেভাবে শেষ করার পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে সহজ জয় নিয়েই বাড়ি ফেরার কথা ভাবছিল সিলেটের ভক্ত-সমর্থকরা; কিন্তু খেলাটা যে ক্রিকেট! তার ওপর টি-টোয়েন্টি। শেষ বল না হওয়া পর্যন্ত যে খেলায় কে জিতবে কে হারবে- বলা মুস্কিল। তেমনই এক শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলাররা।

শেষ ওভারেই সেই শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথম বলেই শুভাগত হোমকে সাজঘরে ফিরিয়ে ডোয়াইন ব্র্যাভো ‘চ্যাম্পিয়ন’ ড্যান্স দেয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু নুরুল হাসান সোহানের হাতে যে বিগ হিট রয়েছে, তা কি জানতেন ব্র্যাভো! না হয়, শুভাগতকে আউট করে এভাবে ড্যান্সটা না দিয়ে অপেক্ষা করতে পারতেন। সোহান এসেই পরের বলটা উড়িয়ে দিলেন বাউন্ডারির ওপারে। মাঝে একটু গ্যাপ, ১-১ রান করে নিয়ে এগিয়েছেন সোহান। ওভারের পঞ্চম বলটি থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে পার করে দিলেন বাউন্ডারির বাইরে।

সঙ্গে সঙ্গেই ডাগ আউট থেকে দৌড়ে মাঠে ঢুকে পড়লেন অধিনায়ক নাসির হোসেন, আন্দ্রে ফ্লেচার, উপুল থারাঙ্গা থেকে শুরু করে দলের কর্মকর্তা, সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমদেও। জড়িয়ে ধরলেন সোহানকে। যেন তিনিই নায়ক। শেষের নায়ক তো সোহানই। তার শেষ মুহূর্তের দৃঢ়তায় যে, টানা দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় পেয়ে গেলো সিলেট সিক্সার্স। ঢাকা ডায়নামাইটসের পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকেও দিলো পরাজয়ের স্বাদ।

প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ঢাকা ডাইনামাইটসকে উড়িয়ে দেয়ার পর, দ্বিতীয় ম্যাচেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিছে নাসির হোসেনের সিলেট সিক্সার্স। টান টান উত্তেজোনাপূর্ণ ম্যাচে এক বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে সিলেট। কুমিল্লার দেয়া ১৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষ দিকে এসে সিলেটকে একটা সময় মনে হচ্ছিলো হেরেই যাবে। তবে শেষ পর্যন্ত সোহানের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপূণ্যে জয় পায় সিলেট।

শেষ ওভারে সিলেটের দরকার ছিল ১০ রান। কুমিল্লার অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি বল তুলে দেন ডোয়াইন ব্রাভোর হাতে। প্রথম বলেই ব্রাভো বোল্ড করে দেন শুভাগত হোমকে। উইকেটে আসেন নুরুল হাসান সোহান । মাথায় তার তুমুল চাপ। চাপ সামলে দ্বিতীয় বলেই ব্র্যাভোকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান।

এই ছক্কার ফলে সমীকরণ দাঁড়ায় চার বলে চার রান। এরপর দুই বলে দুটি সিঙ্গেল নিয়ে খেলায় আরও রোমাঞ্চ তৈরি করে দেয় সিলেট। ব্রাভোর পঞ্চম বলটি থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে চার মেরেই সোজা সতীর্থদের দিকে ছোটেন সোহান। আর ওদিক থেকে সবার আগে মাঠের দিকে ছুট দেন নাসির হোসেন। যিনি শেষ ওভারটা কোনভাবেই চেয়ারে বসে থাকতে পারছিলেন না উত্তেজনায়।

এর আগে তাইজুল-সান্তোকিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লা করে ১৪৫ রান। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে থারাঙ্গা ও ফ্লেচার ৭৩ রানের জুটি করে সিলেটকে অনেকটাই জয়ের দিকে এগিয়ে দেন।

ফ্লেচারকে ব্যক্তিগত ৩৬ রানে সাজঘরে ফিরিয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভো। এরপর মোহাম্মদ নবির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাব্বিরও ফিরেছেন ৩ রান করে। ৫১ রান করে রান আউটের কবলে পড়েন থারাঙ্গা।

এরপর নাসির হোসেনও ১৮ রান করে ফিরে গেলে কিছুটা চাপেই পড়ে সিলেট; কিন্তু শেষ সময়ে শুভাগত হোমের আউটের পর সোহানের চাপকে জয় করে করা অসাধারণ ব্যাটিংই সিলেটকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যায়।

কুমিল্লার হয়ে ব্রাভো ৩.৫ ওভার বল করে ৩৪ রান দিয়ে ২টি উইকেট তুলে নিয়েছে। রশীদ খান ও মোহম্মদ নবী ১ টি করে উইকেট নিয়েছেন। হুইটলি ও থারাঙ্গা রানআউট হয়েছেন।

ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন উপুল থারাঙ্গা এবং ম্যাচের এক্সাইটিং ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন নুরুল হাসান সোহান।

Check Also

আশাশুনিতে ছাত্র শিবিরের আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্ণামেন্ট

আশাশুনি প্রতিনিধি।। আশাশুনিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির আশাশুনি উপজেলা শাখার আয়োজনে আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।