মোঃ রেজাউল বারী বাবুল : ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের টঙ্গীতে হাসপাতালের এক কর্মচারীকে হত্যার দায়ে একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড এবং অপর দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপর দুই আসামীর প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম করাদন্ড দেয়া হয়েছে। গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক সোমবার সকালে এ রায় প্রদান করেন।
এদের মধ্যে মৃত্যুদন্ড দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হলো- বরিশাল জেলার কোতয়ালী থানার পলাশপুর গ্রামের মৃত শাহজাহান ফকিরের ছেলে আল আমিন ওরফে ছিনতাইকারী আল আমিন (৩২) এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলো- গাজীপুরের টঙ্গীর মরকুন টেকপাড়া এলাকার আজগরের ছেলে রকি ওরফে রাকিব (২৪৬) ও বি. বাড়িয়া জেলার কসবা থানার শাহাপুর গ্রামের ফজু মিয়ার ছেলে কাকন ওরফে কালন (২৩)। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী ছিনতাইকারী আল আমিন আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত এক বছর ধরে পলাতক রয়েছে।
গাজীপুর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমেদ ও কোর্ট ইন্সপেক্টর রবিউল ইসলাম জানান, বি বাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার কাঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আব্দুল কাইয়ুম দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে গাজীপুরে টঙ্গীর গোপালপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার ছেলে আমির হোসেন রিংকু (২৭) ঢাকার উত্তরায় একটি (রিজেন্ট) হাসপাতালে চাকরী করত। ২০১৫ সালের ১২ জুন রাতে বাসায় ফিরছিল রিংকু। সে রাত পৌণে ১০টার দিকে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতুর পশ্চিম পার্শ্বে পৌছলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামীরা রিংকুর গতিরোধ করে। এসময় তারা রিংকুকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রিংকুকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে পরদিন টঙ্গী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৭ সালের ১১ মার্চ ওই তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এমামলায় ৯জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন এবং দীর্ঘ শুনানী ও যুক্তিতর্ক শেষে সোমবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। তবে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী পলাতক রয়েছে।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন গাজীপুর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমেদ এবং আসামী পক্ষে ছিলেন সরকার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রিপন ও আম্বিয়া আফরোজা রতœা।
###