জেলার প্রথম শতভাগ ডিজিটাল হাজিরার আওতায় দেবহাটা: বিদ্যালয়ে বেড়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি

মীর খায়রুল আলম, সাতক্ষীরা :
জেলার প্রথম শতভাগ ডিজিটাল হাজিরার আওতায় দেবহাটা উপজেলা। বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে প্রাথমিকস্থর থেকে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যববহারের সাথে সাথে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত জাতি গড়ে তুলতে এ উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। আর এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে আধুনিকায় পদ্ধতির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে। যার ধারাবাহিকতায় শ্রেণি কক্ষে মাল্টিমিডিয়ায় ক্লাস নেওয়ার পাশাাশি নতুন যোগ হচ্ছে ডিজিটাল হাজিরার ব্যবস্থা। যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে হাজিরা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি উপস্থিতর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্যে করছে। সেই সাথে ঝরে পড়া শিশুর সংখ্যা কমিয়ে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়াচ্ছে। পাঠদান ও সহজ পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে মাল্টিমিডিয়ায় ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রথামিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি এখন মোবাইল ব্যাংক শিওর ক্যাশের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এতে অভিভাবকদের ভোগান্তি পাশাপাশি বাড়তি সময় কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এমনকি বছরের প্রথম দিন শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে সক্ষম হয়েছে বর্তমান সরকার।
তারই ধারাবাহিকতায় দেবহাটা ঝরে পড়া রোধে গত ২৩ অক্টোবর সোমবার জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে দেবহাটায় ডিজিটাল হাজিরা উদ্বোধন করেন। পরে উপজেলা ২৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন এবং ৬০ প্রাথমিক বিদ্যলয়ে ১৯ ইঞ্চি মনিটর, ১৬জিবি পেনড্রাইভ বিতরন করা হয়।
ডিজিটাল হাজিরার বিষয়টি নিয়ে দেবহাটা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী তামান্না ইসলাম, ৪র্থ শ্রেণির লতা বিশ্বাস ও দেবজ্যেতি জানায়, প্রথমে ডিজিটাল হাজিরা দিতে তারা ভয় পেলেও বর্তমানে নিজেরা হাজিরা দিতে পারে। এতে তাদের ভিতর অনেক আনন্দ ও উৎসাহ কাজ করে। এমনকি সকাল হলে ডিজিটাল হাজিরা প্রদানের আনন্দে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসে। তাদের ভিতর নতুন শক্তি ও সাহস সঞ্চয় হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার দাশ বলেন, শিক্ষদের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরা সময়মত বিদ্যালয়ে আসেন। কেননা জিডিটাল হাজিরায় কোন লুকোচুরি করার সুযোগ নেই। এতে করে অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের সময়মত বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তাতে বেড়েছে উপস্থিতির সংখ্যা।
এদিকে পারুলিয়া জেলিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত ঘোষ জানান, আমার বিদ্যালয়ে ৪ শতাধীক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য একটি হাজিরা মেশিন হওয়ায় শিশুদের মধ্যে প্রতিযোগীতা চলতে থাকে। যাতে হাজিরা প্রদানে সময় বিলম্ব হচ্ছে। আরো একটি মেশিনের ব্যবস্থা করা হলে হাজিরা প্রদানে সময় নষ্ট কমানো সম্ভব হবে বলে দাবি করেন তিনি।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ আল-আসাদ জানান, ডিজিটাল হাজিরার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রাথমিকস্থর থেকে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করছে। সাথে সাথে সময়ের মূল্য ও নিয়মনীতি সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে। আগামী প্রজন্মকে সু-শিক্ষিত করতে বর্তমান সরকারের এটি একটি মহত উদ্যোগ। তিনি আরো বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিশুদের দৈনিক হাজিরা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জিডিটাল পদ্ধতিতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সময় উপযোগী পদক্ষেপ এই ডিজিটাল হাজিরা। সাতক্ষীরার প্রথম দেবহাটা উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে সুশৃংঙ্খল ভাবে শতভাগ ডিজিটাল হাজিরার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এমনকি আমার অফিসেও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ডিজিটাল হাজিরার আওতায় নিয়ে এসেছি। আগামীতে উপজেলার প্রত্যেকটি দপ্তর ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এই হাজিরার আওতায় এনে প্রধান মন্ত্রীর স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে করতে নিরালস ভাবে কাজ করছি।

 

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।