উত্তরা গনভবনের গাছ কর্তন রিমান্ডের আসামী সোহেলকে হ্যান্ডকাপ ছাড়াই আদালতে

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম:নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের উত্তরা গণভবনের গাছ কাটার মামলার একমাত্র আসামি ঠিকাদার সোহেল ফয়সালকে হ্যান্ডকাফ ছাড়াই আদালতে হাজির করা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঠিকাদার সোহেল ফয়সালকে কোর্ট হাজত থেকে এবং রিমান্ড শুনানি শেষে পুনরায় কোর্ট হাজতে নেওয়ার সময় হ্যান্ডকাপ না পড়ানোর ঘটনা সাংবাদিক সহ উপস্থিত জনসাধারনের চোখে ধরা পড়ে। তাহলে আসামি সোহেলকে বিশেষ কোনও সুবিধা দেওয়া হচ্ছে কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষরা। আদালত সূত্র জানা যায়, নাটোরের উত্তরা গনভবনের ভিতরে সম্প্রতি ঝড়ে ভেঙ্গে পড়া এবং মরে যাওয়া দুটি আম, একটি মেহগনিসহ কিছু গাছের ডালপালার কাটার টেন্ডারের নামে লক্ষ লক্ষ টাকার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী তাজা গাছ কেটে নেয় ঠিকদার। এই ঘটনায় ঠিকাদার সোহেল ফয়সালের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী নাজির মমতাজ আলী। পরে ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল গত ২৮ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করে। এ সময় আদালতের বিচারক সোহেল ফয়সালের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার একমাত্র আসামী সোহেল ফয়সালকে ৭দিনের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। পরে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রটে রবিউল ইসলাম শুনানি শেষে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সকালে নাটোর কারাগার থেকে সোহেল ফয়সালকে নাটোর কোর্ট হাজতে আনা হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে হ্যান্ডকাপ না পড়িয়ে আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক রিমান্ড শুনানি শেষে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে ওই আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কন্সটেবুল চন্দন সাহা ঠিকাদার সোহেল ফয়সালকে হ্যান্ডকাপ না পড়িয়ে পুনরায় কোর্ট হাজতে নিয়ে যায়। রিমান্ডের আসামীকে হ্যান্ডকাপ ছাড়া এবং একজন মাত্র পুলিশ কন্সটেবুল দিয়ে আদালতে আনা নেওয়া করা হয়। একজন রিমান্ডের আসামীকে হ্যান্ডকাপ না পড়িয়ে আদালতে হাজির করা নিয়ে এসময় উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মী এবং সাধারণ মানুষ নানা মন্তব্য করেন। তাহলে কি ঠিকাদার সোহেল ফয়সালকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে পুলিশ এমন প্রশ্নও ছুড়ে দেন উপস্থিত অনেকে। নাটোর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, কোন আসামীকে আদালতে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে হ্যান্ডকাপ পড়ানো হয় সিকিউরিটির জন্য। যদি কোন কারনে সে পালিয়ে যায়। রিমান্ডের আসামীকে হ্যান্ডকাপ না পড়ানো বিষয়ে তিনি বলেন, কোন রিমান্ডের আসামী হলে অবশ্যই হাতে হ্যান্ডকাপ পড়াতে হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মন্ডল বলেন, যে কোন আসামীকে আদালতে আনা নেওয়ার জন্য হ্যান্ডকাপ পড়াতে হবে। তাছাড়া ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল এমন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি না, যে তাকে হ্যান্ডকাপ পড়ানো যাবেনা। তবে যারা আসামী আদালতে আনা নেওয়া দায়িত্বে থাকে তারা যদি হ্যান্ডকাপ না পড়ায়, সেই পুলিশ কর্মকর্তা তার দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালনে অবহেলা করেছে। আদালত শেষে সেই পুলিশ কন্সটেবুলকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।