মীর খায়রুল আলম:
গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকট হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, দেবহাটার পারুলিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টি ভূমিহীদের মাঝে শিক্ষার আলো আলোকিত করতে ১৯৯৫ইং সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা ৫ জন, ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা ১৭৮জন। কয়েক বছর আগে পাঁকা পুরাতন জরাজীর্ণ একটি ভবন দেখা যায়। ভবনের পাঁকা অংশে বিভিন্ন স্থান ধ্বসে পড়ে শিক্ষার্থীদের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে এমন অবস্থায় ২০০৬ইং সালে ভূমিহীন পল্লীর জনসাধারণের জন্য নির্মিত আশ্রায়কেন্দ্রে শুরু হয় বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। সেই রুমে কোন রকম ভাবে শুরু হওয়া পাঠদান বর্তমানে নানা সংকটের মুখে পড়েছে। কেননা প্রতিটা বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ শুধুমাত্র শিশু শ্রেণির জন্য বরাদ্ধ। যেখানে শিক্ষা উপকরণ রাখা হয়েছে ৪টির ১টিতে, একটি রুম অফিস কক্ষ হিসাবে, অপর দুটি কক্ষে পাঠদান করা হলেও সংকট থেকে যায় আরও রুমের। এতে করে খোলা পরিবেশে ক্লাস করানো হচ্ছে। আর তাতে শিক্ষার্থীরা পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে নেই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক মানসম্মত কমন রুম, নেই সীমানা প্রাচীর, ওয়াশ রুম, নেই ভালো টয়লেট। ঝড়-বৃষ্টি হলে শিক্ষকসহ ছাত্র/ছাত্রী এবং বই পুস্তক বৃষ্টি পানিতে ভিজে যায়। রৌদের সময় ধুলাবালিতে ভরে যায়।
তবে ১৯৯৫ সালের এই বিদ্যালয় ভবনটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে আছে বহুদিন। বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো বার বার প্রশাসনকে জানানো হলেও তেমন কোন ফল পাওয়া যায়নি। ফল না পেয়ে স্থানীয় ভূমিহীন ছিন্নমূলের মানুষের সহযোগীতায় পরিত্যাক্ত ভবনে ঝুঁকির মধ্যে পাঠদান করা হলেও সেটি এখন পুরোপুরি বন্ধ। সেই সাথে বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। নেই আধুনিক পাঠদানের উপকরণ ব্যবস্থা। নেই পর্যাপ্ত আধুনিক বেঞ্চ-টেবিল। নেই সীমানা প্রাচীর। বিদ্যালয়টিতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টির ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে আসে। আর এ কারনে দীর্ঘদিন ধরে সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। যেখানে বর্তমান সরকার শিক্ষার বিষয়টি অতিগুরুত্বপূর্ণ ভাবে দেখলেও এই বিদ্যালয়টি অবহেলায় পড়ে আছে।
অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমানের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি বিদ্যালয়টির শুরু থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ভবনের আবেদন করেও কোন সাড়া পাচ্ছি না। যদি আমাদের উদ্ধের্তন কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টির দিকে সু-দৃষ্টি দেয় তাহলে আমরা খুবই উপকৃত হব।
এ ব্যপারে অত্র বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য মোকারম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন করে কমিটিতে এসেছি। শিক্ষকদের থেকে জানতে পারলাম বিভিন্ন দপ্তরে ভবনের জন্য আবেদন করে এখনো কোন সুফল পাওয়া যায়নি। আমি আসার পর থেকে নিজ অর্থায়নে এবং পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে বিদ্যালয়ের পরিবেশকে শিক্ষাবান্ধব করে তুলছি। সরকারি ভাবে একটা নতুন ভবন তৈরী করে দিলে আমাদের এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা নির্বিঘিœ পড়ালেখা করতে পারবে। তাছাড়া আগের অকেজো ভবনটি প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে পড়ছে যাতে দূর্ঘটনা ঘটছে। তাই অকেজো ভবনটি ভেঙ্গে স্থানটিতে নতুন ভবন তৈরী করতে কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করছি।
অনতি বিলম্ভে পাঁকা নতুন ভবন নির্মাণ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ করে দেয়ার জন্য দাবী করেন শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মহল।
মীর খায়রুল আলম