সাতক্ষীরায় পাটের লোকসান পুষিয়ে যাচ্ছে পাটকাঠিতে

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:আবু সাইদ বিশ্বাসঃসাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরায় পাটের লোকসান পুষিয়ে যাচ্ছে পাটকাঠিতে। পাটের দাম নিয়ে যখন চিন্তিত ঠিক সেই সময় সাতক্ষীরার পাট চাষিরা পাটকাঠি নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে। সোনালী আঁশ পাট চাষে লোকসান হলেও পাটকাঠি বিক্রি করে তা পুশিয়ে নিচ্ছে।
ঘেরে মাছের খাবার ও জ্বালানি হিসেবে গবর নুড়ির কদর থাকায় এখানে পাটকাঠির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। পাট থেকে যে পরিমাণ পাটকাঠি পাওয়া যায় তাতে সারা বছরের চাহিদা মেটে না, বাইরের জেলা থেকে আমদানি করতে হয়। সে কারণে পাটকাঠি এবার বেশ চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা নানা প্রতিকুলতা সত্ত্বেও বরাবরই পাটের আবাদ করেন। এ বছর পাটের দাম কম হলেও পাটকাঠির চাহিদার কমতি নেই। পানের বরজের শলি ও জ্বালানি হিসাবে পাটকাঠির জুড়ি মেলা ভার।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন হয়েছে ৫৫- থেকে ৬০ মণ। যা থেকে হেক্টরপ্রতি পাটকাঠি পাওয়া যাবে ১ হাজার ১২৫ আটি। এক আটিতে সম্ভবত ১৬০টি পাটকাঠি থাকে। এর মধ্যে ভাল মানের পাটকাঠি পাওয়া যাবে সাড়ে ৭শ’ আটি ও সাধারণ মানের ৩শ’ ৭৫ আটি। আর এই পাটকাঠি বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছে ৫৫-৬০ হাজার টাকা। অপরদিকে পাট বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ৬৫-৬৬ হাজার টাকা। পাটের দাম কম থাকলেও পাটকাঠির উচ্চমূল্যের কারণে কৃষকরা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন।
গত বছরের চেয়ে বাজারে পাটের দাম কম থাকায় এ জেলার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ে।
চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় ১১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। জেলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৭ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
নিম্নমানের ভেজাল বীজ ও প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব এবং স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে সাতক্ষীরায় পাটের ক্ষেত হুমকিতে ছিল। বেশির ভাগ পাট ক্ষেত পোকার আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। কলারোয়া উপজেলায় ৩ হাজার ৯০ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। তালা উপজেলায় ৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। দেবহাটা উপজেলায় ১৮৫ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ৩৫ হেক্টর জমিতে।
আশাশুনি উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ১১০ হেক্টর জমিতে। শ্যামনগর উপজেলায় ০১ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় কোন আবাদ হয়নি। এবং কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৮৫ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ৩৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
সব মিলে পাটের বাজা ভাল পায়নি পাট চাষীরা। তাই চাষীরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাকটাঠির উপর অনেকটা নির্ভর করে।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, সাতক্ষীরায় খুব ভাল মানের পাট উৎপাদন হয়। লক্ষ মাত্রা ছাড়িয়েও যায়। তবে এবার লক্ষ মাত্রা অর্জিত হয়নি। এর পরও পাঠকাটির দাম বেশি থাকায় পাট চাষীরা একটু বেশি দাম পাবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।