মো: বশির আহমেদ : ‘জীবন স্যার’ এর নাম শুনেছেন? সাতক্ষীরার বহুলালোচিত জীবন মাস্টার! কখনও পীর সাহেব, কখনও হাকিম, কখনও পাশের গ্যারান্টিসহ ইংরেজি প্রাইভেট পড়ানো বিচিত্র এক চরিত্র এই জীবন স্যার! সেই জীবন স্যার এখনও বয়স কমে ৮ম শ্রেণির মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ১৫ বছরের শিশু!
আশাশুনি উপজেলার গুনাকরকাটি খায়রীয় আজিজীয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের জেডিসি পরীক্ষার্থী আবু আইয়ুব আনছারীকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার দরগাহপুর সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার ছাত্র, রোল নং ২৭২৭০০, রেজি: নং ১৭১৮৭৯৫৫৫৩, জন্ম তারিখ: ১৫-১০-২০০২ ইং ১৫ বছর বয়সী কে এই আবু আইয়ুব আনছারী? কি তার আসল পরিচয়? প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে তার জীবনের কিছু গোপন রাখা তথ্য। ৫০ উর্ধ্ব বয়সের আবু আইয়ুব আনছারী ওরফে ‘জীবন স্যার’ বহু শিক্ষকেরও শিক্ষক। সাতক্ষীরা শহরের সর্বত্র আলোচিত এই জীবন স্যার। তাকে নিয়ে আলোচনা শেষ নেই। কখনও প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবে তার বাড়িতে পুলিশ যায় প্রাইভেট শিক্ষক জীবনের ভিজিডিং কার্ডে লেখা আছে- তিনি একাধারে আল কুরআনের গবেষক, ইংরেজি শিক্ষা প্রশিক্ষক, অভিজ্ঞ ইংলিশ শিক্ষক, পীরে কামেল, মুফতী, কারী, হোমিও-হারবাল চিকিৎসক এবং ধর্মীয় আলোচক।
তিনি আবার ইংরেজি প্রাইভেট পড়ান। কালিগঞ্জ উপজেলার ছেলে জীবন বহু দিন থেকে সাতক্ষীরাতে অবস্থান করে প্রাইভেট বাণিজ্য করে আসছেন।
৮ম শ্রেণিতে পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে জীবন এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি জেডিসি পরীক্ষা দিচ্ছি তো কি হয়েছে। শিক্ষার শেষ নেই। মানুষকে উপকার করতে শেখেন।”
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে এইস এস সি পরীক্ষার আগের দিন রাতে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অপরাধে সন্দেহভাজনের তালিকায় থাকার কারণে পুলিশের তাড়া খেয়ে কিছুদিন আতœগোপনে ছিলেন তিনি। এলাকার সচেতন মহলের ধারণা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে দুর্বল হওয়ার কারণে কেন্দ্রের ২৯০ জন শিক্ষার্থীকে অনৈতিক সাহায্য করার জন্য তাকে দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো হচ্ছে।
দরগাহপুর সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জানান, বিষয়টি আগে এভাবে ভাবিনি। একটা ঘটনা তো ঘটেই গেছে। এখন কি করা যায় তাই ভাবছি।
গুনাহকরকাটি খায়রীয়া আজিজীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও: নুর ইসলাম জানান, জীবন স্যারের শুধুমাত্র জন্ম সালটা ভুল হয়ে গেছে। বোর্ডে কথা হয়েছে সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
কেন্দ্র সচিব নৈকাটি দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওঃ শেখ ইমদাদুল হক জানান, জেলা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসারকে জন্ম তারিখ এবং বয়সের পার্থক্যের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। ওনারা বলেছেন কাগজপত্র ঠিক থাকলে তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হোক!
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …