৫ দিনেও কর্তৃপক্ষের ভাঙ্গন রোধে সাড়া মেলেনি৫ দিনেও কর্তৃপক্ষের ভাঙ্গন রোধে সাড়া মেলেনিপাইকগাছায় কপোতাক্ষের ভাঙ্গনে ৪ গ্রামের হাজারো বিঘার চিংড়ি ঘের ও আমনের ক্ষেত প্লাবিত : কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি
জি,এ, গফুর, পাইকগাছা ॥ পাইকগাছায় গত ৫ দিনেও কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙ্গনে বোয়ালিয়া ও হিতামপুর এলাকার পানিউন্নয়ন বোর্ডের ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাধ পুনঃ নির্মানের কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি! প্রতি জোয়ারের তীব্র স্রোতে ভাঙ্গনের আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্লাবিত এলাকার ধান-মাছ ও ফসল হারানো ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দিশে হারা হয়ে পড়েছেন! ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এমপি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তারা প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করলেও ভাঙ্গন রোধে কোন পদক্ষেপ বা অর্থ বরাদ্দ না মেলায় এলকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু ভাঙ্গন এলাকা দর্শন করে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় কালে দ্রুত বাঁধ মেরামতসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত পাউবোর শাখা উপ-সহকারী শহিদুল্লাহ মজুমদারের কর্তব্যে অবহেলা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন। গতকাল সকালে সরেজমিনে ভাঙ্গন প্লাবিত এলাকায় পৌছালে এলাকার আমন ধানের চাষী, চিংড়ি ঘের মালিকসহ ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, গত শনিবার দুপুরে পূর্নিমার প্রবল জোয়ারে গদাইপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া-হিতামপুরস্থ স্থানে লাখ-লাখ টাকা ব্যয়ে সদ্য মেরামত করা পানিউন্নয়ন বোর্ডের ২শ ফুট ভেড়িবাধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদে বিলীন হয়ে যায়। এতে কয়েকটা গ্রামের গোটা এলাকা প্লাবিত হয়ে ২ হাজার বিঘার ৮০টি চিংড়ি ঘেরের মাছ, কয়েক’শো বিঘার উঠতি আমন ধানের ক্ষেত, পুকুর, রাস্তা-ঘাট তলিয়ে কোটি টাকার ঊর্ধে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে এলাকা বাসি জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরন কুমার সাধু জানান, প্রথমে ইউপি চেয়ারম্যানের ডাকে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে ভাঙ্গনে মাটি ফেলে আটকানোর চেষ্ঠা করা হয় এবং এ সময় সংশ্লিষ্ট প্রসাশন সাড়া দিলে হয়তো বাধ মেরামত করা সম্ভব ছিল। কিন্তু এ মুহুর্তে পুরোটাই নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে গেছে। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তা, স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব এ্যাডঃ মোঃ নুরুল হক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফকরুল হাসান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সদস্য সচিব মোঃ রশীদুজ্জামান সহ সর্বশেষ জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু ভাঙ্গন এলাকা দর্শন করলেও দ্রুত সময়ে ভাঙ্গন আটকানোর জন্য কারো পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কোন অর্থ বরাদ্দ হয়নি বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে এমপি আলহাজ্ব এ্যাডঃ মোঃ নুরুল হক, সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফকরুল হাসান, যার-যার দপ্তরের দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে উপজেলা পরিষদে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় তারা কোন পদক্ষেপ নিতে না পারলেও উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। দুর্নীতির অভিযোগ এড়িয়ে সংশ্লিষ্ট পাউবো’র শাখা প্রকৌশলী শহীদউল্লাহ মজুমদার বলেন, এ মুহুর্তে ভাঙ্গন রোধে ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজন কিন্তু মন্ত্রনালয় অর্থ বরাদ্দ না করলে তার কিছুই করার নেই বলে মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, কিছু দিন পুর্বে ভাঙ্গন এলাকায় দু দফায় লাখ-লাখ টাকা ব্যয়ে অ-পরিকল্পিত ভাবে বাঁধের গোড়া কেটে পাউবো বিভাগ ৬০ মিটার বেড়ি বাঁধে মাটি ফেলে যেন-তেন ভাবে সংস্কার করেন বলে অভিযোগ উঠে।