হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত সৌদি প্রিন্স মনসুর বিন মুকরিন কিছু দিন আগে ১ হাজার চিঠি লিখেছিলেন।
রাজপরিবারের বর্তমান সদস্যদের উদ্দেশ্যে লেখা ওই সব চিঠিতে বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে সমর্থন না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। খবর মিডলইস্ট মনিটরের।
প্রিন্স মনসুর বিন মুকরিনের চিঠিতে বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স সালমানের স্বৈরাচারী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজপরিবারের তরুণ সদস্যদের ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, প্রিন্স মনসুর বিন মুকরিনকে মৃত্যুর ঘটনার মাধ্যমে অন্যদের নীরব বার্তা দেয়া হয়েছে। সালমান তার ক্ষমতার জন্য যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে এবং কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠলে তার পরিণতি মনসুরের মতো হতে পারে।
রোববার দেশটির আসির প্রদেশের দক্ষিণে ইয়েমেনের সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান বলে সৌদি গণমাধ্যমে প্রথম সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রিন্স মনসুর বিন মুকরিন আসির প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। দুর্ঘটনায় মনসুর বিন মুকরিনসহ তার সঙ্গে থাকা অপর উচ্চপদস্থ ৭ কর্মকর্তা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে যে যুবরাজ নিহত হয়েছেন, তিনি সাবেক আরেকজন ক্রাউন প্রিন্সের ছেলে।
নিহত যুবরাজের বাবাকে ২০১৫ সালে তার সৎভাই এবং বর্তমান রাজা সালমান সরিয়ে দিয়েছিল।
তবে মনসুর বিন মুকরিন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
প্রিন্সকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের টার্গেটে ছিল বলে খালিজ টাইমসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে মিডলইস্ট মনিটর।
দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, প্রিন্স মনসুর বিন মুকরিন ও ৭ সরকারি কর্মকর্তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ক্রাউন প্রিন্সের টার্গেটে ছিল। কারণ ক্রাউন প্রিন্স দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন, মনসুরই একমাত্র সালমানের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে যাচ্ছে।
এ সময় সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া প্রিন্স মনসুর বিন মুকরিনের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। যেখানে তাকে সঙ্গীসহ হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করতে দেখা যায়।
গত শুক্রবার সৌদি আরবে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে নামে হঠাৎ করে গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়। এতে ১১ প্রিন্স ও সাবেক-বর্তমান ৪০জন মন্ত্রীসহ মোট ২০২জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সর্বশেষ শুক্রবার ধনকুবের প্রিন্স আল ওয়ালদ বিন তালালের মেয়ে রিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে এসব ব্যক্তিকে আটক করা হলেও বিশ্বের বহু বিশ্লেষক মনে করছেন, যুবরাজ মুহাম্মদ নিজের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য এসব ধরপাকড় অভিযান চালাচ্ছে। নিজের ছেলেকে ক্ষমতায় বসাতে এবং তার ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করার জন্য রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে এসব করাচ্ছেন।