ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:ঢাকায় বিএনপি’র সমাবেশে যাত্রার সময় গাজীপুরের নেতাকর্মীরা পরিবহন সংকটে পড়েছে। রোববার ভোর থেকেই গাজীপুর টু ঢাকাগামী সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ফলে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা ট্রেন , নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থায় ,ও পায়ে হেটে বিকল্প উপায়ে সমাবেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।
এদিকে সমাবেশের আগের রাতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে গাজীপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের ২৯ নেত-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাজাহারুল আলম জানান, সমাবেশের জনস্রোত ঠেকাতে সরকারের লোকজন ভীত হয়ে গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী সকল পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। নেতাকর্মীদের মাঝে ভীতি ছড়ানোর জন্য সমাবেশের আগের রাতে পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীদের আটক করেছে। তবুও জনস্রোত ঠেকানো যাবেনা। বিএনপি’র হাজার হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন বিকল্প উপায়ে জনসমাবেশের দিকে যাত্রা করেছে। আমি ট্রেনযোগে সমাবেশের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। এই মূহুর্তে আমি টঙ্গীতে ।
টঙ্গী থানার ওসি মো. ফিরোজ তালুকদার জানান, টঙ্গীতে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শনিবার রাতে বিএনপির যুবদল নেতা আমজাদ হোসেন ঝুনাসহ সাত নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া কালিয়াকৈর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, একই অভিযোগে একই রাতে কালিয়াকৈর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মৌচাক ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ও সাধারন সম্পাদক মনির সিকদারসহ ১১ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
শ্রীপুর থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জয়নাল আবেদীন জানান, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহ্জাহান ফকির এবং গাজীপুর জেলা শ্রমিক দলের কোষাধ্যক্ষ ও শ্রীপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মো: হারিছ মাঝিসহ ৫ জনকে আটক করা হয়।
এছাড়া কাপাসিয়া থেকে ৪জন, কালীগঞ্জ ২জন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন বলেন, ঢাকা থেকে অনত্র যানবাহন চলতে দেয়া হলেও ঢাকার দিকে কোন গাড়ি চলতে দেয়া হচ্ছে না। উপরোন্তু তাদের শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের নেতা-কর্মীদের আটক করে ভয়-ভীতি ছড়াচ্ছে। এ অভিযানের আগেই তাদের অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা ঢাকায় চলে গেছেন।
গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তায় গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকা উত্তরার বায়ার অফিসের কর্মকর্তা স্বপন জানান, তিনি সকাল ৮টা থেকে গাড়ির জন্য প্রায় একঘন্টা ধরে দাড়িয়ে আছেন। ঢাকার দিকে কোন গাড়ি যেতে দিচ্ছে না পুলিশ। গাজীপুরে উত্তরবঙ্গগামী সকল যানবাহন চললেও ঢাকাগামী যাত্রীবাহী কোন পরিবহণ চলছে না। উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী বিভিন্ন পরিবহণের বাস গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা থেকে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে ঢাকাগামী যাত্রীরা পরিবহন সংকটে পড়ে বাসস্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে ভিড় জমিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের এএসপি সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা কোন গাড়িকে বাধা দিচ্ছে না। পরিবহণের লোকেরাই গাড়ি নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন না। তবে কি কারণে তারা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে না সে ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
গাজীপুর টু ঢাকা চলাচলকারী গাজীপুর পরিবহনের শিমুলতলী কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে কাউন্টার বন্ধ । টার্মীনালে ২৫ /৩০ টি বাস দার করানো থাকলেও শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছে। বেশ কয়েকজন যাত্রীও লাগেজ নিয়ে দাড়িয়ে আছে। বাস কাউন্টার ও বাস চলাচল বন্ধ কেন জানতে চাইলে গাজীপুর পরিবহনের হেল্পার হারিস ও রশিদ জানান, পরিবহনে ডিউটি কারার জন্য ভোরে কাউন্টারে এসে পৌছেছি। এসে শুনি আজ বাস চলবে না। কেন চলবে না জানতে চাইলে তারা কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিএনপি’র সমাবেশের কারনে বন্ধ কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, হতে পারে।