সাতক্ষীরার স্কুলছাত্র ইমরান হোসেনের তৈরি মাটিকাটা যন্ত্র (এক্সক্যাভেটর) পানির পাম্পের শক্তিতে চলে। পেট্রল-ডিজেলেও চলে। তবে কোনো শক্তি ক্ষয় হয় না। এ উদ্ভাবনে তার খরচ হয়েছে মাত্র ২০০ টাকা।
সাতক্ষীরা পৌর এলাকার রইসপুর গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে ইমরান হোসেন। খানপুর মাদ্রাসার ছাত্র ইমরান এবারের দাখিল পরীক্ষার্থী।
ইমরান জানায়, তার এক্সক্যাভেটরে তৈরিতে দরকার কিছু হার্ডবোর্ড। একটি কাঠের বডি (অবয়ব)। ওপরের ছাদ ককশিটের। দরকার কিছু বাঁশের চটা। বডিও তৈরি বাঁশের চটায়। দাঁতওয়ালা যে ডালা দিয়ে মাটি খনন ও উত্তোলন করে অদূরে ঢালতে হয় কেবল সেটিই তৈরি ইস্পাতের।
ইমরানের এই যন্ত্র ব্যবহারে দরকার তিনটি সুইচ। এই সুইচ ব্যবহৃত হয় সিগন্যালের জন্য। এক্সক্যাভেটরটি সামনে-পেছনে নেওয়ার লাল-নীল সংকেত রয়েছে। পেছনে যেতে লাল সংকেত জ্বলে ওঠে। সুইচ টিপলে দিব্যি এক্সক্যাভেটরের মুখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মাটি কাটে আর মাটি ফেলে।
ইমরান জানায়, এক্সক্যাভেটরটি চলে চারটি চাকার ওপর। তার ওপর রয়েছে হুইল কভারও। তরল পদার্থ পাম্পিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। এ জন্য শক্তি ক্ষয়ের কোনো সুযোগ নেই। পানি ডিজেল যাই হোক যেমন তেমনই থাকবে।
ইমরান হোসেন জানায়, সি প্লেন (পানি থেকে উড্ডয়নক্ষম উড়োজাহাজ) তৈরির কাজে হাত দিয়েছে সে। সি প্লেন তৈরিতে ব্যয় হতে পারে ৫০ হাজার টাকার মতো। কিশোর বলে, ‘আমি এটি তৈরি করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু আমার তো টাকা নেই। বাবা দিনমজুর। তাঁরও সহযোগিতার আগ্রহ আছে। কিন্তু তাঁর সাধ্য নেই আমার জন্য এত টাকা খরচ করার।’ সে বলে, বাবার কথা মতো কাজে না গিয়ে হেলিকপ্টার তৈরিতে সময় নষ্ট করায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি। ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভেঙে দিয়েছিলেন সেটি।
ইমরান বলে, ‘প্রকৌশল বিদ্যাকে হাতের মুঠোয় আনতে চাই। খেলনা দিয়ে শুরু করে তা বাস্তবেও কাজে লাগাতে চাই। আমার লক্ষ্য ভবিষ্যতে যন্ত্র প্রকৌশলী হওয়া। আর নিজেকে নানা উদ্ভাবনে সমর্পণ করার অদম্য ইচ্ছে আমার। কিন্তু আমি কি পারব আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে?’