,রাহাত রাজা :সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীর নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশ করেও ফরম ফিলাপে শিক্ষার্থীদের হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, সাতক্ষীরার কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। শিক্ষকদের অবহেলা আর গাফিলতির এবং সিমাহীন কোচিং বানিজ্যের কারনে দিন দিন প্রতিষ্ঠানটি হারিয়ে ফেলছে তার ঐতিহ্য। সারাদেশের ন্যায় কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ও গত অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হয় এস,এস,সি পরিক্ষার চূড়ান্ত নির্বাচনী পরীক্ষা যা গত ২৮ অক্টোবর শেষ হয় এবং ফলাফল প্রকাশিত হয় ৫ নভেম্বর।
সূত্রে আরও জানা যায়, ৫ নভেম্বর বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে দেওয়া হয় পরীক্ষায় উত্তীর্ন ও অনুত্তীর্ন ছাত্র ছাত্রীদের তালিকা। এসময় তালিকায় দেওয়া হয়নি কোন গ্রেডিং পয়েন্ট, এবং শিক্ষার্থীদের পাশের ফলাফল স্বরুপ দেওয়া হয়নি কোন মার্কশীট। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর উত্তীর্ন ছাত্র ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে ফরম ফিলাপের জন্য হাজির হলেও দেখা দেয় বিপত্তি।এসময় বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম কয়েকজন শিক্ষার্থীদের বলেন তারা পরিক্ষায় ১ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে এবং ফরম ফিলাপ করতে দেওয়া হবে না। অথচ একই সময় বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে দেখা যায় কৃতকার্য তালিকায় তাদের রোল রয়েছে কিন্তু শিক্ষার্থীদের বলা হচ্ছে তারা ফেল করেছে।
এ সময় সরেজমিনে কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হলে ঘটনার সত্যতা মেলে এবং ৩ জন ভ’ক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়। যাদের রোল নং – দশম (খ) ৪৩,৪৪,৪৬। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, “বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তালিকায় আমাদের রোল থাকলেও আমাদেরকে এখন বলা হচ্ছে আমরা এক সাবজেক্ট এ ফেল করেছি এবং ফরম ফিলাপ করতে দেওয়া হবে না। এছাড়া আমাদের বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক আমাদেরকে তাদের কাছে কোচিং করার জন্য বারবার বললেও আমরা কোচিং করিনি বলে আমাদেরকে এতটা ভোগান্তি দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।
উপস্থিত অনেক অভিভাবক জানিয়েছে, সরকার কোচিং বানিজ্য বন্ধে বিভিন্ন নীতিমালা করলেও কোন কিছুই মানছেন না এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আমরা অভিভাবকরা শিক্ষকদের হয়রানীর কাছে ধরাশায়ী হয়ে যাচ্ছি। একমাত্র কোচিং বানিজ্য নিয়েই এই ধরণের সমস্যার সৃষ্টি বলে মতামত অভিভাবকদের।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, এটি শিক্ষকদের গাফিলতির ফলে এই ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি মনে করি এর বাইরে আমি কিছুই বলতে পারব না আপনারা প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েরা বিশেষত অংক ইংরেজিতে দূর্বল। তাই আমরা অংক ইংরেজি খাতা মূল্যায়ন করেই ফলাফল প্রকাশ করেছি। অন্য সাবজেক্ট কেন বিবেচনা করলেন না? এবং ফলাফলের প্রকাশের পর এমন কেন হল? এছাড়া সর্বমোট কতজন শিক্ষার্থীর এমন সমস্যা? ইত্যাদি প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি সফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি জানি না, তবে তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা নেব। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানিনা তবে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে দেখব।
এলাকার শান্ত পরিবেশ দিন দিন অশান্ত করে দিচ্ছে বিদ্যালয়ের কতিপয় কোচিংবাজ শিক্ষক। যাদের কাছে না পড়লে এই ধরণের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এই সব দূনির্তিবাজ শিক্ষকদের অপসারণ এবং ভোগান্তির শিকার শিক্ষার্থীরা যাতে সুন্দরভাবে ফরম ফিলাপ করে পরীক্ষা দিতে পারে তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসকসহ উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি ও সচেতন মহল।