নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের নাটোর সুগার মিল ও নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল জোনে অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই শুরু করায় দুইশ’ জনের বিরুদ্ধে সোকজ নোটিশ পাঠানো এবং ১৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। চালু থাকা অন্যান্য পাওয়ার ক্রাসার মালিকের বিরুদ্ধেও মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের মহা ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) রাকিবুর ররহমান খান জানান, আগামী ১৭ নভেম্বর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ২০১৭-১৮ আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হবে। এবারে দুই লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১৮ হাজার ৭শ’ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই মিল জোনে পাওয়ার ক্রাশার রয়েছে দুইশ’ থেকে দুইশ’ ৫০টির মত। এবারের আখ মাড়াই মৌসুম শুরুর আগেই প্রায় দেড় শতাধিক পাওয়ার ক্রাশার মালিক অবৈধভাবে আখমাড়াই শুরু করেছে। এভাবে চলতে থাকলে মিলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না বিধায় ইতোমধ্যেই প্রায় একশ’ পাওয়ার ক্রাশার মালিকের নামে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও নোটিশ পাঠানো হবে। তিনি আরও জানান, নোটিশ পাঠানো ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে নাটোর সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ শহিদুল্লাহ জানান, ২০১৭-১৮ মাড়াই মৌসুমে এক লাখ ৬০ হাজার মে.টন আখ মাড়াই করে ১২ হাজার ৪শ’ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে নাটোর সুগারমিল। আগামী ১৭ নভেম্বর এই মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হবে কিন্তু ইতোমধ্যেই মিল এলাকার প্রায় একশ’ ২০টির মত পাওয়ার ক্রাশার মালিক অবৈধভাবে আখ মাড়াই শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে প্রায় একশ’ জনের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আর দুই পর্যায়ে প্রশাসনের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে মোট ১১টি ক্রাশার জব্দ করা হয়েছে। ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ জানান, কৃষকদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে পাওয়ার ক্রাশারে আখ সরবরাহ বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সাথে ক্রাশার মালিকদের বিরুদ্ধে সাধারন কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ আলোচনা, প্রশাসনের অভিযান ও উকিল নোটিশ দেয়া ইত্যাদি কাজও করা হচ্ছে। যারা এর পরও পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই বন্ধ করবেন না চিনি শিল্পকে রক্ষার স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা করা হবে।
নাটোর শহরের এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পঁচিশদিনে
দু’বারে নগদ সহ নয় লাখ টাকা চুরি : তিনবার চেষ্টা
নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর শহরের চকরামপুর মহল্লায় রাফিদ মটরস নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তিনবার চেষ্টা করে দু’বারে নগদ াসহ নয় লাখ টাকার বেশী সম্পদ চুরির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গরবার রাতে দ্বিতীয়বার থানায় অভিযোগ দেয়ার আগেই প্রথম মামলার চার আসামীর তিনজনই জামিনে মুক্ত হয়ে গেছে। দোকানের মালিক আলতাফ হোসেন প্রামাণিক জানান, গত মাসের ১৯ তারিখে দোকানে নগদ আট লাখ ৬৪ হাজার টাকা রেখে দোকান বন্ধ রেখে বাড়ি চলে যান। পরদির সকালে দোকান খোলার পর ভিতরে ঢুকেই দেখতে পান টিনের চাল কাটা এবং ড্রয়ার ভাঙ্গা। এসময় তিনি দেখেন ড্রয়ারে রাখা নগদ আট লাখ ৬৪ হাজার টাকাও নেই। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিতে সিসি ক্যামেরা চালু থাকায় রাতে তার দোকানে আসা চার পাঁচজন চোরের গতিবিধি লক্ষ্য করে রুস্তম আলী নামে একজনকে সনাক্ত করা যায়। খবর পেয়ে নাটোর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যায়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা রুস্তম আলীকে আসামী করে রাফিদ মটরস্ এর মালিক আলতাফ হোসেন প্রামাণিক নাটোর থানায় একটি অভিযোদ দায়ের করেন। পুলিশ রুস্তম আলীকে আটক করে ১৬৪ ধারায় তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী ফারুক বিশ^াস, আওরঙ্গেব সুফী ও মো: কৌশিক নামে আরও তিন আসামীকে আটক করে কোর্টে চালান দেয়। এরপরে ১১ নভেম্বর রাতে ভেন্টিলেটার ভেঙ্গে আবারও ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি করার চেষ্টা হয় বলেও তিনি জানান। আলতাফ হোসেন প্রামাণিক জানান, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরদিন ১২ নভেম্বর দ্বিতীয় বার রাতে দেয়াল ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে থাকা দামী ল্যাপটপ, একটি মডেম ও একটি সীম চুরি করে নিয়ে গেছে। ওইি রাতের ফুটেজ দেখে মুখোস পরা একজনকে ওইসব চুরি করে নিতে দেখা গেলেও তাকে সনাক্ত করা যায়নি। খবর পেয়ে আবারও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যাওয়ার পর ১৩ নভেম্বর রাতে চুরির অভিযোগ এনে আলতাফ হোসেন প্রামাণিক নাটোর থানায় আরও একটি অভিযোগ করেন। এদিকে একই দিনে দুপুরে আগের মামলায় আটক ফারুক বিশ^াস, আওরঙ্গেব সুফী ও মো: কৌশিক জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। ব্যবসায়ী আলতাফ হোসের জানান, প্রথম চুরির ঘটনার পর থেকেই তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। তিন আসামী জামিন পাওয়ায় তিনি খুব বেশী শঙ্কিত হয়ে পরায় বিষয়টি নাটোরের পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদারকেও জানিয়ে রেখেছেন। এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ আকবর আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মামলার অন্যতম আসামী রাব্বীকে এখনও ধরা যায়নি। তাকে ধরা হলে তদন্তের কাজ দ্রতই শেষ করে মূল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়া সম্ভব হবে।