ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:
ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ইতিহাস যতই মুছতে চেষ্টা করুন, তা সম্ভব নয়। ইতিহাস সত্যকেই তুলে ধরে।
৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিলের স্বীকৃতি দেয়ায় ইউনেস্কোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর কোনো ভাষণ এত দিন, এত ঘণ্টা প্রচার হয়নি। ওই ভাষণে যতই বাধা এসেছে মানুষ ততই জাগ্রত হয়েছে।
নাগরিক কমিটির ব্যানারে আয়োজিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যারা এ ভাষণ বাজাতে বাধা দিয়েছে, আজ যখন ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তখন তাদের কি লজ্জা হয় না? জানি না এদের লজ্জা-শরম আছে কিনা? কারণ এরা তো পাকিস্তানি বাহিনীর প্রেতাত্মা।
শেখ হাসিনা বলেন, তখন ৫৬ শতাংশ মানুষ ছিল পূর্ব পাকিস্তানে। কিন্তু বাঙালির কোনো অধিকার ছিল না। পশ্চিম পাকিস্তানিরা সম্পূর্ণ শোষণ করেছে। তারা আমাদের মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। তখন বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তিনি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালিরা শাসনভার হাতে নিক তা পাকিস্তানিরা কখনও চায়নি। ডিসেম্বরের ৭ তারিখ ইলেকশন হয়। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি গেল কিন্তু তারা ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। বঙ্গবন্ধুর কথায় এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।
৭ মার্চের ভাষণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা সেদিন ভাষণ দিয়েছিলেন লাখো মানুষ এসেছিল এ রেসকোর্স ময়দানে। বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে এখানে এসেছিল তারা।
‘জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। জাগ্রত করেছিলেন বাঙালি জাতিকে। ৭ মার্চ সেদিন তার নির্দেশনা নিতে লাখ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে এসেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শেষ দিকে বলেন, ‘এতক্ষণ মেঘে ছেয়েছিল, আজকে আমাদের সূর্য নতুনভাবে দেখা দিয়েছে। এই সূর্যই আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আবারও আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ লিখিত ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইউনেসকো কর্তৃক ৭ মার্চের ভাষণকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডকুমেন্ট স্বীকৃতি প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক নেতাই অনেক ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই ভাষণগুলো ছিল লিখিত। একটি মাত্র ভাষণ যার কোনো লিখিত ছিল না। এমনকি নোটও ছিল না। প্রতিটি কথাই তিনি বলে দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি জাতিকে তিনি জাগ্রত করেছিলেন আন্দোলন-সংগ্রামে। সেদিনের ভাষণের কথা মনে হলেই আমার মনে পড়ে আমার মায়ের কথা।
তিনি বলেন, অনেক লিখিত বক্তব্য বাবার হাতে দেয়া হয়েছিল। মা বাবাকে বলেছিল, তুমি সেই কথা বলবে, যা তোমার মনের কথা।
এর আগে শনিবার দুপুর ২টা ৩৯ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন।