ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:যুক্তরাষ্ট্রের সফররত সিনেটরগণ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল এবং মানবাধিকারের মৌলিক লঙ্ঘন।
জেফ ম্যার্কলি’র নেতৃত্বে সফররত এই সিনেটরগণ আজ প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণভবনে সাক্ষাতকালে একথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
মার্কিন সিনেটরগণ বলেন, প্রত্যেক দেশের এই অপরাধ ও জাতিগত নিধনের নিন্দা জানানো উচিত। এই সংকটের সমাধান ও উদ্বাস্তুদের তাদের নিজ দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো সোচ্চার হতে হবে।
তারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদার সহযোগিতার প্রশংসা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
তারা বলেন, উদ্বাস্তুরা তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি খুবই সন্তুষ্ট।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভয়ঙ্কর নিপীড়নের বর্ণনা দিয়ে জেফ ম্যার্কলি বলেন, তারা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে নির্যাতিতদের কাছ থেকে সরাসরি নিপীড়নের তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে নির্মম নিপীড়নের শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের ভারতে আশ্রয় নেয়ার কথা স্মরণ করে মানবিক কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতার শিকার নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী তার ও তার বোন শেখ রেহেনার ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর ভারতে আশ্রয় নেয়ার স্মৃতিও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার আমাদের নিকট প্রতিবেশী। আমরা চাই তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে।
তিনি বলেন, সনাক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী তাদের পরিচয়পত্র দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই সমস্যায় ৬০ হাজারেরও বেশি নাগরিক ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং বাংলাদেশ তার নাগরিকদের ফিরিয়ে এনে তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে।
ইহসানুল করিম বলেন, মার্কিন সিনেট প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে বলেন, এটা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের কঠোর পরিশ্রমের স্বাক্ষর। তারা নারীর ক্ষমতায়নেরও প্রশংসা করেন।
সিনেটরগণ জলবায়ু ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার প্রশংসা করেন।
মার্কিন সিনেটর রিচার্ড ডারবিন, কংগ্রেসওম্যান বেট্টি ম্যাক কল্লাম ও জন সেহকোশি এবং কংগ্রেসম্যান ডেভিড সিসিল্লিন অন্যান্যের মধ্যে এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।