তুলে নিয়ে যাওয়ার ৮১ দিন পর বাড়ি ফেরা ব্যবসায়ী ও বেলারুশের অনারারি কনসাল অনিরুদ্ধ রায় একটি চিঠি লিখেছেন। নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আরএমএম গ্রুপের প্যাডে লেখা চিঠিতে তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে। চিঠিতে অনেক বিষয়ে কথা বললেও এই ৮১ দিন তিনি কোথায় ছিলেন, কীভাবে ছিলেন, সে বিষয়ে কিছুই বলেননি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমি অনিরুদ্ধ কুমার রায়, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরএমএম গ্রুপ। আমি ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার শিকার। আমার ব্যবসায়িক অংশীদার মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন গং আমার প্রতিষ্ঠিত তিনটি প্রতিষ্ঠান আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আরএমএম নিট ক্লথিং লিমিটেড ও আরএমএম সোয়েটার লিমিটেড (যার সম্পদের মূল্য ১৫০ কোটি টাকার অধিক) হস্তগত করার জন্য হেন কোনো কাজ নেই, যা করেননি। ২৭ আগস্ট গুলশান-১-এর ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে মিটিং শেষে ফেরার পথে বিকেল সাড়ে চারটায় ওই বিল্ডিংয়ের নিচ থেকে আমাকে অপহরণ করা হয়। সম্ভবত ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার কারণে এমনটা হয়েছে বলে আমি আশঙ্কার প্রকাশ করি।’
চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, ‘আমার অবর্তমানে আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। যার মধ্যে ক) আমার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এলআইবি-এর শিপমেন্ট সার্টিফিকেট প্রদানে বিএফএলএলএফইএ এর চেয়ারম্যান হিসেবে অনৈতিকভাবে বাধা প্রদান, খ) নিয়ম বহির্ভূতভাবে অন্য কোম্পানি থেকে পাওনা ৫ কোটি টাকা কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার পরিবর্তে নিজের নামে গ্রহণ, গ) ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের হুমকি দেওয়াসহ বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করা, ঘ) আমার অনুপস্থিতিতে আমার অনুমতি ব্যতিরেকে আমার অফিস কক্ষ থেকে জরুরি নথিপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উল্লেখযোগ্য। অপহরণ করার পর তাঁরা আমার সমুদয় সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য নানাবিধভাবে চাপ প্রয়োগ করা এবং আমি তা দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করি। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় গত ১৭ নভেম্বর বাসায় ফিরি।’
ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা চেয়েছেন।
অনিরুদ্ধ রায় ‘রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ’ হওয়ার পর অজ্ঞাত স্থান থেকে ফিরে এসে এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে কথা বলেননি। আজ এই চিঠি লিখেছেন। তিনি সাতবার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব (সিআইপি) হিসেবে সরকারের স্বীকৃতি পেয়েছেন। গত ২৭ আগস্ট গুলশানের ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে বের হয়ে গাড়িতে ওঠার সময় সাত থেকে আটজন লোক আসেন। তাঁরা নিজেদের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যান। পুরো ঘটনাটি ঘটে দিনদুপুরে এবং তাঁর গাড়ির চালকসহ ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন অনেকে। পরে তাঁর ভাগনে কল্লোল রায় গুলশান থানায় জিডি করেন।