রসুলপুর হাইস্কুলে লিখিত পরিক্ষায় পঞ্চম স্থান লাভ করলেও টাকার জোরে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ দেওয়ার চেষ্টা !# ডিজি প্রতিনিধির সাফ কথা ‘উপরের চাপ আছে# এমপির প্রার্থীকে পাস করাতেই হবে

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট: লিখিত পরিক্ষায় পঞ্চম স্থান লাভ করলেও টাকার জোরে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আর এ পরিক্ষায় ডিজি প্রতিনিধির সাফ কথা ‘উপরের চাপ আছে। এমপির প্রার্থীকে পাস করাতেই হবে।
সাতক্ষীরার রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শুন্য পদে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে এই অভিযোগ করে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ কয়েক সদস্য।
রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন এই দুর্নীতির প্রতিবাদে কমিটির সভাপতি একরামুল কবির খান পদত্যাগ করেছেন। ফলে বিদ্যালয়ে এখন প্রশাসনিক শুন্যতা বিরাজ করছে। তবে ডিজি প্রতিনিধি সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উ”চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, আমি এমন কথা বলিনি। তা ছাড়া প্রশ্ন ফাঁসও করিনি’।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সভাপতি একরামুল কবির খান বলেন পদটি শুন্য হবার পর কমিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ভবতোষ কুমার সানাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়। এর পর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এর ওপর ভিত্তি করে গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় নিয়োগ পরিক্ষা। তিনি জানান এ পরিক্ষায় পঞ্চম স্থান লাভ করেন প্রার্থী সুলতানা কামাল ডেইজি। অথচ নিয়োগ বোর্ডের ডিজি প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন ডেইজিকে নিযোগ দানের পাঁয়তারা করেন। এ সময় বোর্ডের সভাপতি ও সদস্য পৌর কাউন্সিলর ফারাহ দীবা খান সাথী এর প্রতিবাদ করেন। এর পর আবদুল্লাহ আল মামুন নতুন করে প্রার্থী কামরুল ইসলাম ও তানজিরুল হককে যৌথ প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বলে ঘোষনা দেন। তখন সবার প্রতিরোধের মুখে তিনি কোনো ঘোষনা না দিয়ে স্কুল ত্যাগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন প্রধান শিক্ষক পদে ডেইজি আইনগতভাবে যোগদানে ব্যর্থ হয়ে নতুন কৌশল অবলম্বন করে ভারপ্রাপ্তপ্রধান শিক্ষক ভবতোষ সানাকে জোর করে তার পদত্যাগপত্রে সই করান। । এর পরই আবুল বাসার পল্টুকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে বসানো হয়। পরে ১৭ নভেম্বর নিয়োগের নতুন তারিখ ঘোষনা করা হয়। এই পরিক্ষার আগের রাতে ডিজি প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন মোটা টাকার বিনিময়ে নিজেই পরিক্ষা সমন্বয় করেন। পরিক্ষা শুরুর আগে সুযোগ বুঝে ডেইজির কাছে প্রশ্নপত্র তুলে দেন আবদুল্লাহ আল মামুন। এ সময় তিনি সরাসরি ডেইজিকে চিহ্ণিত করে প্রশ্ন ও তার সঠিক উত্তর গ্রহন করেন। এ সময় উপস্থিত নিয়োগ বোর্ড সদস্যরা প্রতবাদ করে বলেন সবার সামনে প্রশ্ন তৈরি করে তা সরবরাহ করতে হবে। কিন্তু তিনি তা শোনেন নি। উল্টো এমপির ভয় দেখিয়ে কাগজপত্রে সবার স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এখন সেই সুলতানা নার্গিস ডেইজিকে প্রধান শিক্ষক বানানোর প্রচেষ্টা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় সাতক্ষীরার রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয় নন্দিত শিশু চিকিৎসক প্রয়াত ডা. এমআর খানের নিজ উদ্যোগে ও অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত। সেই বিদ্যালয়ে এমন দুর্নীতি এলাকাবাসী কিছুতেই মেনে নেবে না । তার এর প্রতিকার দাবি করেছেন। বিদ্যালয়ে নতুন নিয়োগ বোর্ড গঠন করে তার মাধ্যমে স্ব”ছভাবে পরিক্ষা গ্রহনের বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর ফারাহ দীবা খান সাথী, হাফিজুর রহমান বিটু, লিয়াকত আলি খান, কাজী তারিকুল ইসলাম, তাসিন করিম খান, আবদুর রউফ সানা প্রমুখ।

 

Check Also

সাতক্ষীরা জেলা জলবদ্ধতা নিরসন কমিটির সভা

শাহ জাহান আলী মিটন , সাতক্ষীরা :সাতক্ষীরা   জেলা  জলবদ্ধতা নিরসন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাতক্ষীরা জেলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।