অভয়নগর প্রতিনিধি : সাধারণ জনগণের কর-খাজনার টাকায় চাকুরিজীবীদের বেতন ভাতার ব্যবস্থা হয়। হত দরিদ্র কৃষক কোনো খাস জমি ভোগ করলে তাকে অপদস্ত করে উচ্ছেদ করা হয়। কিংবা ৫-১০ হাজার টাকা ব্যাংক ঋণ নিলে প্রকৃতি প্রতিকূলে থাকায় অথবা চরম দারিদ্রতার যাতাকলে পড়ে ধার্য্যদিনে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলার মাধ্যমে পুলিশী হয়রানী ও জেল জুলুমের শিকার হতে হয়। অথচ বিত্তশালীরা খাস জমিসহ পৌর শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সিংহভাগ দখল করে বছরের পর বছর ভোগ দখল করছে। যার কারন নাগরিকদের কাছে আর আর অজানা নয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর নওয়াপাড়ার ১৫-২০ ফুট চওড়া পাকা রাস্তা অলিগলির অধিকাংশই বিত্তশালী ঊভয়পাশের ব্যবসায়ীরা ৪-৫ফুট চৌকি পেতে বহল তবিয়তে ব্যবসা করে যাচ্ছে। অবশিষ্ট রাস্তা আছে ৬-৭ ফুট। যে কারণে জনসাধারণের চলাচলের বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। ভ্যান রিক্সা ও জনগণের মধ্যে চলে দীর্ঘক্ষণ জট। যে কারণে মূলবান কর্মসময় অপচয় হচ্ছে। সোনাপট্টি, তাফাল পট্টি, কাপড় পট্টি, গামের্ন্টস পট্টি, হার্ডওয়ার ও ভূষি মালের পট্টি, বিশেষ করে কাঁচা বাজারের ১০-১২টি অলিগলি বেদখল। যশোর-খুলনা রোড থেকে বাজার কালিবাড়ির দিকে নেমে গেছে ও শংকরপাশা হাইস্কুল গেটের বিপরীতে খান হার্ডওয়ারের রাস্তা এবং দক্ষিণের কাঁচা বাজার ২০ফুট রাস্তার ১০ ফুট রাস্তা বেদখল হয়ে আছে দীর্ঘদিন। অনুরূপ সুপারীপট্টির রাস্তাও বেদখল। শিল্প শহর নওয়াপাড়ার সবচেয়ে ব্যস্ততম নূরবাগ হয়ে মনিরামপুর রোডের দুপাশে চৌকি পেতে নির্বিঘেœ ব্যবসা করে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এতে জনভোগান্তি হলেও দেখার কেউ নেই। উল্লেখ্য এই ব্যস্ততম এলাকায় প্রতিনিয়তই একটা না একটা দূর্ঘটনা ঘটছেই। একই চিত্র দেখা যায় অভয়নগরের সুন্দলী বাজারে।
যেভাবে জবর দখল ও বাণিজ্য চলছে তাতে প্রতিয়মান হয়, এটা যেন মগের মুল্লুক। শিল্প শহর নওয়াপাড়ার রাস্তাগুলোর হিসাব নিকাশ কর্তৃপক্ষের কিতাবে থাকলেও সরজমিনে তার কোনো অস্তিত্ব খুজে পাওয়া দুষ্কর। ব্যাপারটি এমনই কাজীর গরু কিতাবে আছে, কিন্তু গোয়ালে কই?
সুন্দলী নিবাসী জয়ন্তী রায় বাজার কালিবাড়ির রোডের এল্যুমিনিয়াম পট্টিতে দাড়িয়ে কাঁদছিলেন এ সময় এ প্রতিবেদক তাকে কান্নার কারণ জানতে চাইলে তিনি শাড়ি দেখিয়ে বলেন গত কয়েকদিন আগে তার স্বামী ৪হাজার একটি শাড়ী তাকে উপহার দিয়েছে। রাস্তার চৌকিতে লটকানো পেরেকে তার শাড়ীটি ৮-১০ইঞ্জি লম্বা চিরে যায়। এল্যূমিনিয়াম দোকানদারকে রাস্তার চৌকিতে পেরেক লটকানো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে উল্টো ঐ ব্যবসায়ী জয়ন্তী রায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, দেখে শুনে হাঁটতে পারেন না? এমন ধমক দেওয়ার স্পর্ধা দেখে পথচারীরা হতবাক হয়ে যান। এক পথচারী বলেই ফেললেন, রাস্তা দখল করবেন, আবার ধমকও দেবেন। চোরের মার লম্বা গলা। এভাবে প্রতিনিয়ত পথচারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আসছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বললেন, রাস্তার জবরদখল করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যা অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না। আইন গ্রন্থে আছে, কিন্তু পালন করার চর্চা নেই। কোনো মেয়র জবরদখলকারীরর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থ গ্রহণ করেননি এপর্যন্ত। যার কারণ নির্বাচন। প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণে নিরব যেন মুখে কুলুপ এটে আছেন। তিনি আরো বলেন, এ সমস্যার স্থায়ী নিরসন করতে হলে, থানা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এবং সকল চৌকি উচ্ছেদ করে উপজেলা ও পৌরসভা চত্ত্বরে স্তুপ করে রেখে পরে তা নিলামে বিক্রি করতে হবে।
Check Also
সাতক্ষীরায় ৪ গ্যালন ফরমালিন পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ গ্যালন ফরমালিন পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তবে এসময় …