স্টাফ রিপোর্টার: দৈনিক আমার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, সরকার জোরপূর্বক আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে রেখেছে। এর মাধ্যমে তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রই ফুটে উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে আমার দেশ পত্রিকার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের মহাসচিব এম. আব্দুল্লাহ, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র সভাপতি কবি আবদুল হাই সিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আমার দেশ’র বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমার দেশ বন্ধ করে রাখার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। এটা সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বন্ধ করে রেখেছে। দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই সরকার এটা করতে পারছে।
তিনি বলেন, হাইকোর্ট আমাদের পক্ষে রুল জারি করলেও রুলের নিষ্পত্তি না হওয়ায় আমার দেশ প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। এর ফলে পত্রিকার পাঁচশতাধিক সাংবাদিক কর্মচারী চাকরিহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ‘ফ্রি, ফেয়ার এন্ড ফাংশনাল জুডিশিয়ারি’ না থাকলেও অনন্যোপায় হয়ে আমরা আদালতের কাছেই গেছি। রিট দায়ের করেছি। আদালতকে বলেছি ছাপাখানায় তালা দিয়ে রাখার কোন এখতিয়ার পুলিশের নেই। পাঁচ বছর ধরে যে মামলাটি চার্জশিট দেয়া হয়নি, সেই মামলাকে উপলক্ষ করে আমার দেশ’র মত একটি জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক এভাবে বন্ধ করে রাখা যায় না। একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থাবর সম্পত্তি কোন আইনে পুলিশ এভাবে বছরের পর বছর দখল করে রাখতে পারে না। কেন আমার দেশ পত্রিকার ছাপাখানার তালা খুলে মালিককে তা বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না।
তিনি জানান, আমার দেশ পত্রিকার যে ঋণ বর্তমান মালিক পক্ষ কোন দিন গ্রহণ করেননি, সেই ঋণের দাবিতে একটি বেসরকারি ব্যাংককে দিয়ে ক্ষমতাসীন মহল বেআইনিভাবে আমাদের বন্ধ ছাপাখানা নিলামে উঠানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আদালত কত বিষয়ে রুল ও আদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু আমার দেশ এর রুলটি নিষ্পত্তি করে কেন বিপুল সাংবাদিক কর্মচারীর রুটি-রুজির সুযোগ করে দিচ্ছেন না বুঝে আসে না।
আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল পত্রিকাটি দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতাসিন সরকারের আক্রমণের শিকার হয়। আজ দীর্ঘ চার বছর সাতমাস ধরে পত্রিকাটি বন্ধ। আমাকে আমার দেশ অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে দ্বিতীয় দফায় প্রায় চার বছর বন্দী করে রাখা হয় এবং রিমান্ডে নির্যাতন করা হয়। স্কাইপ কেলেঙ্কারী ফাঁস করার অভিযোগে আমার দেশ এর মাথার উপর ৫৭ ধারার মামলার খড়গ প্রায় পাঁচ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখার মাধ্যমে বেআইনীভাবে পত্রিকার ছাপাখানা তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অথচ একই সংবাদ ছাপার কারণে লন্ডনের ইকনোমিস্ট পত্রিকার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয় এবং পরে ওই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। তিনি বলেন, আমার দেশ সত্য রিপোর্ট এবং জাতীয় স্বার্থের বিষয়গুলো তুলে ধরার কারণেই সরকারের প্রতিহিংসার স্বীকার হয়েছে। আমরা আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছি এবং দেশবাসীর কাছে তাদের প্রিয় পত্রিকা প্রকাশে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি হাইকোর্ট আমার দেশ এর রুল নিষ্পত্তি করে অবিলম্বে পত্রিকাটি প্রকাশের সুযোগ করে দেবেন।
Check Also
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল
র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …