ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:জমজ সন্তানের একটি বের করার পর আরেকটিকে ভেতরে রেখেই নারীর পেট সেলাই করে অস্ত্রোপচার শেষ করার ঘটনায় ভিকটিম কুমিল্লার খাদিজা আক্তারকে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি চিকিৎসক ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন আদালত।রোববার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার এ বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি হয়। সেদিন সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দুকুমার রায় দুটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন।
এ সময় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক শেখ হোসনে আরা বেগম এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আবদুল মতিন খসরু।ঘটনাটি আদালতের নজরে আনা আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন উপস্থিত ছিলেন। আদালত আইনজীবীদের পাশাপাশি ডা. হোসনে আরার বক্তব্য শোনেন। এরপর রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
গত ২৯ অক্টোবর জমজ সন্তানের একটি বের করার পর আরেকটিকে ভেতরে রেখেই নারীর পেট সেলাই করে দেয়ার ঘটনায় সেই চিকিৎসক ও কুমিল্লার সিভিল সার্জনসহ তিনজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ বিষয়ে প্রতিবেদন নজরে এনে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
গত ৭ নভেম্বর কুমিল্লার সিভিল সার্জন, কুমিল্লার গৌরীপুরের লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক এবং অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক শেখ হোসনে আরা বেগমকে হাজির হয়ে জবাব দিতে বলা হয়। আদালতে হাজির হয়ে তাদের ওই ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা করতেও বলা হয়।
ওই দিন শুনানিতে আদালতে হাজির হয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক হোসনে আরা বেগম বলেন, আমি কনফিডেন্ট ছিলাম, তাই ওই অস্ত্রোপচার করেছি। এ সময় আদালত বলেন, আপনি কনফিডেন্ট থাকলেন কিন্তু এত কিছু হয়ে গেল। আমাদের এত ওভার কনফিডেন্ট ডাক্তারের দরকার নেই, গুড সার্জন দরকার।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে ‘জমজের একটিকে পেটে রেখেই অস্ত্রোপচার শেষ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আলগিরচর গ্রামের প্রবাসী আউয়াল হোসেনের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে স্থানীয় গৌরীপুরে লাইফ হসপিটাল ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানে ওই দিনই সিজারের মাধ্যমে তার একটি কন্যা সন্তান হয়। তখন অন্তঃসত্ত্বার স্বজনরা খাদিজার পেটে জমজ বাচ্চা রয়েছে জানালে অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক শেখ হোসনে আরা বলেন, খাদিজার পেটে বাচ্চা একটিই। অন্যটি টিউমার। চার দিন ভর্তি রাখার পর তাকে ক্লিনিক থেকে ছুটি দেয়া হয়।