ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ৬ সংবাদকর্মী লাঞ্ছিত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে দেবীগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় পৌরসভা কাউন্সিলর, উপজেলা যুবলীগের এক পক্ষের কয়েকজন নেতাসহ সংবাদকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন সাংবাদিক নেতারা।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, আরটিভি’র রাজিউর রহমান রাজু, মানবজমিনের সাবিবুর রহমান সাবিব, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সরকার হায়দার, ডিবিসি’র মো. লুৎফর রহমান এবং ৭১ টিভির জেলা প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম দেবীগঞ্জে যান।
দুপুরে তারা পৌরসভা কার্যালয়ে পৌর প্রশাসক, কাউন্সিলর এবং উপজেলা যুবলীগ কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। হঠাৎ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ মিঠু, সামিনুর রহমান শাওন, যুবলীগ নেতা আয়নাল হকসহ স্থানীয় যুবলীগের এক পক্ষের কয়েকজন নেতাকর্মী সাংবাদিকদের গালাগালি শুরু করেন।
তারা চিৎকার করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কারা নিউজ করতে এসেছেন, বের হন। একপর্যায়ে তারা কক্ষ থেকে সংবাদকর্মীদের টেনে বের করার চেষ্টা করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর আকসাদুল ইসলাম তাদের বাধা দিলে তাকে মারপিট করে নেতাকর্মীরা। তারা সাংবাদিক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদকেও ধাক্কা দেন। পরে সংবাদকর্মীরা দৌড়ে পৌর কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. আমিনুল ইসলামসহ পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার পঞ্চগড় প্রতিনিধি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বলেন, আমরা ৬ সহকর্মী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে দেবীগঞ্জে যাই। পৌরসভা কার্যালয়ে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলছিলাম।
এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীও ছিলেন। হঠাৎ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ মিঠুসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী আমাদের গালাগালি শুরু করে। তারা আমাকে ধাক্কা দেয়। একপর্যায়ে আমরা অবরুদ্ধ হই। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফিরুজুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পৌর কার্যালয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী উত্তেজিত হয়ে গালাগালি শুরু করেন। পরে থানার ওসিকে মোবাইল করে বিষয়টি জানানো হয়।
দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাৎ জামান চৌধুরী বলেন, আমাকে জানিয়ে আসলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটত না।
দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনাকে অবরুদ্ধ বলা যাবে না। তবে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশের উপস্থিতির পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।