প্রশাসন নীরব,জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ!
শ্যামনগরে ইটভাটা সরকারি নীতিমালা ছাড়াই চলছে, পরিবেশ হুমকীর মূখে
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ শ্যামনগরে সরকারি নিয়মনীতি ছাড়াই ইটভাটা চলছে গণহারে। পরিবেশ অধিদপ্তর শুধু নয়, বরং ভাটা মালিকরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও ট্রেড লাইসেন্স বা প্রত্যয়ন পত্র না নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। ইটভাটা স্থাপন বা পরিচালনা সরকারি নীতিমালা কে তোয়াক্কা না করে প্রশাসন কে ম্যানেজ করে ইটভাটা গুলো চলছে। সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান,শ্যামনগরের মেসার্স মোস্তফা ব্রিক্স,বকুলের ইটভাটা ও সোনার মোড় সংলগ্ন আব্দুর রাজ্জাকের ইটভাটা সহ কয়েকটি ভাটায় শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন বা প্রত্যয়ন পত্র না নিয়ে কাজ করছে। ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে সরকারের রাজস্ব।মোবাইলে জিজ্ঞাসা করলে শ্যামনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডঃ জহুরুল হায়দার বাবু জানান, তারা এ সীজনে তার পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স বা প্রত্যয়ন পত্র নেননি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি ইট তৈরির জন্য কৃষিজমি, পাহাড়, টিলা, মজা পুকুর, খাল, বিল, খাঁড়ি, দিঘি, নদ-নদী, বা পতিত জায়গা থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ ছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে, ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাঁচামাল পরিবহন না করা, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি. কৃষি জমি ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় কোনো ইট ভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও শ্যামনগরে চলছে হরহামেশা।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মিত উপজেলা বা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে ইটভাটায় চলাচলের জন্য কোনো ভারি যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ কিন্তু ইট আনা নেয়ার জন্য সরকার ও স্থানীয় সরকারের নির্মিত এসব সড়ক বা পথ দিয়েই চলাচল করছে ভারি যানবাহন। অধিকাংশ ইট ভাটার জন্যই কৃষিজমি, পাহাড়, টিলা, মজা পুকুর, খাল, বিল, খাঁড়ি, দিঘি, নদ-নদী, বা পতিত জায়গা থেকে মাটি কাটা হয়। এসব জায়গা থেকে মাটি তুলেই তৈরি হয় ইট।শ্যামনগরে বিল বা জলাশয় ভরাট করে তৈরি হয়েছে ইট ভাটা।ধোয়া নির্গমনের জন্য সরকার নির্ধারিত ৬৫ ফুটের মান সম্মত চোঙা ব্যবহার করা হচ্ছে না। ইটভাটার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে সোনা ফলানো মাটি। ইটভাটার তপ্ত আগুনে পুড়ছে এখানকার উর্বর মাটি।পোড়ানো হচ্ছে সবুজ বৃক্ষ। ক্ষতির মূখে পরিবেশ। নওয়াবেঁকীর মেসার্স জামান ব্রিক্স সরকারি জায়গায় বনায়ন নিধন করে সরকারি নীতিমালা ছাড়াই চলছে কার্যক্রম। সরকারি ভাবে মেসার্স জামান ব্রিক্সের সংলগ্ন জায়গা মাপ জরিপের দিন অদৃশ্য শক্তিতে পরিবর্তন হচ্ছে। মেসার্স জামান ব্রিক্সের ধোঁয়া নির্গত চোঙা হেলে পড়েছে। যে কোন মুহূর্তে ব্যাপক জান মালের ক্ষতির সস্মুখিন। প্রশাসন স্বচক্ষে দেখেও কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ। জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে ইট তৈরী করে ভাটা মালিকরা আঙুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকরা। ভাটার মালিক পক্ষদের যোগাযোগের চেষ্টা করেও না পাওয়ায় তাদের ভাষ্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ইট প্রস্তুত ও ইট ভাটা স্থাপন সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের জন্য শ্যামনগরে আইনের প্রয়োগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।স্থান নির্বিশেষে ক্রমবর্ধমান ইটভাটা দেখেই এলাকাবাসী অভিযোগ জানিয়েছেন। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে সরকারি ্আইন মোতাবেক ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বদা মনিটরিং করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …