ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:সেনাবাহিনীর সদস্য মো. মহসিন হত্যা মামলায় স্ত্রী সালেহা খাতুন শিউলিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।বুধবার ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সালেহা চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের আইঠাদি মাথাভাঙ্গার সিরাজুল ইসলাম মাস্টারের মেয়ে। বর্তমানে তিনি পলাতক।
বিচারক রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে বলেন, পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে সমাজে বর্তমানে স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করছে আবার স্ত্রীও স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করছে। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ ধরনের মামলার আসামির উপযুক্ত বিচার হওয়া প্রয়োজন।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া না হলে এরকম নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যার অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্তি দেয়া সম্ভব হবে না বলেও পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন আদালত।
আদালত আরও বলেন, এ মামলার আসামি যে অপরাধ করেছে- তা খুবই মর্মান্তিক, নারকীয় ও ভয়ংকর। তার অপরাধ বর্বরতা মানব সভ্যতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সভ্য সমাজে মানুষের কাছে এ অপরাধ কোনোভাবেই সহনীয় ও গ্রহণযোগ্য নয়।
মামলার বিচার চলাকালে চার্জশিটভুক্ত সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিপ্লবকুমার শীল নিহতের স্ত্রীকে একমাত্র আসামি করে ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে বলা হয়, মো. মহসিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি তার স্ত্রী, দুই ছেলে প্রান্ত ও প্রিয়ন্তকে নিয়ে পল্লবীতে বসবাস করতেন।
সালেহা বিভিন্নজনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত থাকার ফলে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি লেগেই থাকত।
এর জেরে ২০১২ সালের ২৬ অক্টোবর সালেহা খাতুন পরকীয়া প্রেমিকের সহায়তায় শরীফ চৌধুরী আপন, সুরুজ মিয়াসহ ৫/৭ জনকে নিয়ে মহসিনের লিঙ্গ ও অণ্ডকোষ পুরোটাই শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করেন।
এছাড়া মহসিনের গলার শ্বাসনালি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলা হয়। পরে সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. মজনু মিয়া বাদী হয়ে পল্লবী থানায় মামলা করেন।
এদিকে ঘটনার পর সালেহাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান সালেহা। এরপর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
০৬ ডিসেম্বর ২০১৭,বুধবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতনিধি/আসাবি