ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: বিপিএলের এবারের আসরে সেঞ্চুরি কেন হচ্ছে না সেটা নিয়ে দর্শকদের আক্ষেপের শেষ ছিলো না। বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও ফিরে এসেছেন। অবশেষে দর্শকদের সেই ক্ষুধা মেটালেন টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা ক্রিস গেইল।
টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরি জিনিসটা যার নামের পাশে সবচেয়ে ভালো মানায় অবশেষে তার হাতেই এলো সেই কাঙ্খিত বস্তু। মিরপুরে শুক্রবার ব্যাট হাতে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড়টি তুললেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব, আর সেই ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল খুলনা টাইটানসের শিরোপা স্বপ্ন।
মিরপুরের ক্ষত-বিক্ষত পিচে ১৪০ রান তাড়া করতেই যেখানে ব্যাটসম্যানদের গলদঘর্ম, সেখানে খুলনার ছুড়ে দেয়া ১৬৮ রানের টার্গেটকে কঠিনই মনে হয়েছিলো। এরপর আবার দলীয় ২৫ রানেই দুই উইকেট হারায় রংপুর।
কিন্তু ক্রিস গেইল যেন ব্যাট নয়, দুই হাতে তরবারি চালিয়েছেন খুলনার বোলারদের ওপর।তাই বড় স্কোরও তার কাছে পাত্তা পায়নি। প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ম্যাচকে বানিয়ে দিয়েছেন একপেশে। ২৮ বল হাতে রেখেই রংপুর রাইডার্স ম্যাচ জিতলো ৮ উইকেটে। উঠে গেল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে।
গেইলের ইনিংসে ছিলো ১৬টি ছক্কা আর চার ‘মাত্র’ ছয়টি। মাঠে যেন চারের চেয়ে ছক্কা মারাকেই তার কাছে সহজ মনে হয়েছে এদিন। সব মিলে ৫১ বলে খেলেছেন অপরাজিত ১২৬ রানের ইনিংস। তার ঝড়ে প্রথম ১০ ওভারেই ১০৪ রান তোলে রংপুর। ২৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন গেইল।
আর ১৪তম ওভারে মাহমুদুল্লার প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪৫ বলে। এটি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি। অন্যপাশে ৩৬ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত ছিলেন মোহাম্মদ মিথুন।
খুলনার সংগ্রহ ১৬৭
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের পঞ্চম আসরের এলিমিনেটর ম্যাচে মাশরাফির রংপুরের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জিং স্কোরই গড়েছে মাহমুদউল্লাহর খুলনা। টসে জিতে খুলনাকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় রংপুর। খুলনার এক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছাড়া টপঅর্ডারের কোনো ব্যাটসম্যানের মধ্যেই যেন রান তোলার তাড়া ছিল না। তবে শেষ দিকে দুই ক্যারিবিয় পুরান-ব্রাথওয়েটের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আর রংপুরের ফিল্ডিং মিসে ভালো সংগ্রহ পায় খুলনা টাইটান্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা করে ৬ উইকেটে ১৬৭ রান।
টপ অর্ডারেরদের ব্যর্থতার পর শেষ দিকে খুলনার হয়ে রান করেন আরিফুল হক ও দুই ক্যারিবিয় ব্যাটসম্যান ব্রাথয়েট-পুরান। আরিফুল হক করেন ৩০ বলে ২৯ রান। নিকোলাস পুরান করেন ২২ বলে ২৮ রান। যার মধ্যে ছিল ২টি বাউন্ডারি ও ১টি ওভার বাউন্ডারি। আর পুরানের স্বদেশী ব্রাথওয়েটের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৯ বলে ২৫ রান। যাতে ছিল ৩টি চার ও ১টি ছয়।
এর আগে ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ১৫ রানে আউট হয়ে গেলেও আরেক ওপেনার মাইকেল কিঙ্গার করেন ২৬ বলে ২১ রান। বোঝাই যাচ্ছে, টি-টোয়েন্টির আমেজ ছিল না তার ব্যাটে। বাউন্ডারি ছিল মাত্র একটি। ওভার বাউন্ডারি ছিল না।
আর আফিফ হাসান ৯ বলে ১১ রান করলেও, একটি করে ছয় ও চারের মার ছিল তাতে। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় ছিল না। মালিঙ্গার বলে সরাসরি বোল্ড হয়েই ফেরেন এই তরুণ হার্ড হিটার। রংপুরের বোলারদের মধ্যে লাসিথ মালিঙ্গা একাই দুটি উইকেট নিয়েছেন। যদিও তিনি চার ওভার বল করে রান দিয়েছেন ৪৯। এছাড়া সোহাগ গাজী, নাজমুল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও রবি বোপারা একটি করে উইকেট পেয়েছেন।
লিগ পর্বে ১২ খেলায় অংশ নিয়ে ৭ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থানে থেকে এলিমিনেটর খেলার সুযোগ পায় খুলনা। অপরদিকে, ১২ খেলায় ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে থেকে এলিমিনেটর খেলার টিকিট পায় রংপুর। আজ সন্ধ্যায় প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে মুখোমুখি হবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও দ্বিতীয় স্থান পাওয়া বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারের বিজয়ী দল সরাসরি চলে যাবে ফাইনালে। আর হেরে যাওয়া দল খেলবে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে। যেখানে এলিমিনেটর ম্যাচ জয় করা দলটি থাকবে।
০৮ ডিসেম্বর ২০১৭,শুক্রুবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবি