ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট:নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের শর্ত প্রতিপালন করছে কিনা তা জানাতে চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৩১ নভেম্বর দলগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ইসিকে এ বিষয়ে অবগত করার জন্য বলা হয়। কিন্তু সময় মতো জবাব না দিতে পারায় মতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ পাঁচটি দল আরো সময় চায়।
পরিপ্রেেিত তাদের অতিরিক্ত সময় দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অপর পে ১২টি দল নির্ধারিত সময়ে কোনো জবাব দেয়নি। এমনকি অতিরিক্ত সময়ও চায়নি কমিশনের কাছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা কেন নেয়া হবে না তা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ইসিতে জানাতে বলা হয়েছে।
গত বুধবার ইসির এ সংক্রান্ত চিঠি দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে বলে ইসির একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
গত ৩১ জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত টানা চার মাস আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সুশীলসমাজ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, এনজিওকর্মী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে কমিশন। সংলাপে অংশ নেয়া প্রতিনিধিদের মধ্যে সুশীলসমাজ, সাংবাদিক এবং সাবেক কমিশনাররা ইসিকে সক্ষমতা অর্জন এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রশাসনে দলীয়করণ যাতে কমানো যায় তার জন্য ইসিকে ক্ষমতা অর্জন ও প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। আর টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পক্ষপাতিত্ব না করে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। সবার জন্য নির্বাচনে সমান সুযোগ নিশ্চিত না করতে পারলে আইন ভঙ্গের জন্য নির্বাচন কমিশন জাতির কাছে দায়ী থাকবে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. তাসনিম আরিফা সিদ্দিকী বলেন, সবাই আগামীতে ইনকুসিভ নির্বাচনের উপর জোর দিয়েছি। সাংবিধানিক ক্ষমতার প্রয়োগ করার মতো সক্ষমতা রয়েছে তা ইসিকে প্রমাণ করতে হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, গত ৩১ অক্টোবর ৪০ রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে দলগুলোর বর্তমান সাংগঠনিক কার্যক্রমের তথ্য জানতে চায় কমিশন। দলগুলোর দেয়া চিঠি অনুযায়ী গত ২১ নভেম্বর ১৫ কার্যদিবস শেষ হয়। কিন্তু প্রায় দেড় ডজন দল সাংবিধানিক সংস্থার সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে। নামসর্বস্ব ১২ দল সময় চেয়ে আবেদন করেনি। তবে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি আরো সময় বাড়তে আবেদন।
হালনাগাদ তথ্য জমা না দেয়া ১২ দল হচ্ছেÑ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, গণফোরাম, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
জানতে চাইলে কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, যারা সময় চেয়েছে এবং যারা চায়নি সবাইকে এক মাস সময় দিয়েছে। এসব দলের জন্য এটাই শেষ সুযোগ। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের দলীয় সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরে তথ্য না দেয় তাহলে ওই দলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।ইসির রোডম্যাপে বলা হয়েছে, নিবন্ধিত দলগুলো বিধি-বিধানের আলোকে পরিচালিত হচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখার আইনানুগ দায় রয়েছে ইসির
০৮ ডিসেম্বর ২০১৭,শুক্রুবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/নয়াদিগন্ত/আসাবি