ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গভীর নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। এ কারণে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নদীবন্দরগুলোর জন্য দেখানো হয়েছে এক নম্বর সতর্ক সংকেত।
সাতক্ষীরাতে ভোর রাত থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শীতের মধ্যে টানা বৃষ্টিপাতে মানুষের জন জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ধান তোলার মৌসুমে এমন বৃষ্ঠি কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। এ রিপোর্ট লোখা পর্যন্ত অর্থাৎ সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত বৃষ্পিপাত অব্যাহত ছিল।এছাড়া একই অবস্থা গোটা দক্ষিণ্চালে।
এদিকে নিন্মচাপের কারণে শুক্রবার চট্টগ্রামে দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। সামান্য গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়ও।
অসময়ের এ বৃষ্টিতে ঠাণ্ডার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে চট্টগ্রামবাসীকে। এ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে আজও। এমনকি ঢাকায়ও তা হতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ছয় ঘণ্টার জন্য দেয়া আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গভীর নিন্মচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। গভীর নিন্মচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিন্মচাপটির কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রুলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদে থাকতে বলা হচ্ছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিন্মচাপটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৬.০ব উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.৫ব পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯০৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
একই সময়ে নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রামে দুর্ভোগ : চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে শুক্রবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। অসময়ের এ বৃষ্টিতে ঠাণ্ডার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে।
অনেককেই দিনের বেলায়ও গরম কাপড় পরে ছাতা নিয়ে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। শীতের শুরুতেই বৃষ্টির জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউই। হঠাৎ বৃষ্টিতে তারা বিপাকে পড়েন।
পতেঙ্গায় অবস্থিত চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমদ যুগান্তরকে বলেন, ‘লঘুচাপটি এখন গভীর নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’
আবহাওয়াবিদরা জানান, নিন্মচাপটির অবশ্য সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার শঙ্কা খুব কম। এর প্রভাবে দেশের উপকূল অঞ্চল থেকে ঢাকা পর্যন্ত মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়বে। তবে নিন্মচাপের প্রভাব কেটে গেলে শীত বাড়বে।
০৯ ডিসেম্বর ২০১৭,শনিবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবি