ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:চট্টলবীরখ্যাত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে স্মরণকালের বৃহত্তর জানাজা হয়েছে চট্টগ্রামে। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে শুক্রবার আসর নামাজের পর কয়েক লাখ মানুষের ঢল নামে লালদীঘির ময়দানে। এ সময় লালদীঘি ময়দানের চারপাশে চার-পাঁচ কিলোমিটার এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে।
চট্টগ্রামে আর কোনো জানাজায় এত মানুষের ঢল নামেনি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর এ জানাজা স্মরণকালের বৃহত্তর জানাজা বলে স্থানীয়রা জানান।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শুধু চট্টগ্রাম নয়, ঢাকাতেও অনেক মানুষ কাঁদছেন। আমাদের কাজ করতে হবে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বপ্নকে পূরণ করা। চট্টগ্রাম যেদিন জলাবদ্ধতামুক্ত গ্রিন ও ক্লিন হিসেবে পরিণত হবে, সেদিনই মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বপ্নপূরণ হবে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, রাজনীতি ও সমাজসেবায় অসামান্য অবদানের জন্য চট্টগ্রামবাসী তাকে চট্টলবীর হিসেবে জানে। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে চট্টগ্রামসহ সারা দেশ ও জাতি আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ নেতাকে হারাল।
তিনি বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর খুব কাছের আর আদরের ছাত্রনেতা ছিলেন। তিনিই একমাত্র নেতা ছিলেন, যিনি চট্টগ্রামের স্বার্থে নিজ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। দলমত নির্বিশেষে চট্টগ্রামবাসীর কাছে তিনি জনপ্রিয় একজন নেতা ছিলেন। এ কারণে মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পর পর তিনবার মেয়র হন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী আমার অত্যন্ত ঘনিষ্টজন ছিলেন। রাজনৈতিক মতাদর্শে আমরা ছিলাম একে অপরের পরিপূরক। দেশের যে কোনো সংকটময় মুহূর্তে মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন সাধারণ মানুষের কাতারে।
চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক, অবহেলিত চট্টগ্রামের কাণ্ডারি। তার হাত ধরেই চট্টগ্রামের মানুষের প্রত্যাশা অনেকাংশে পূরণ হয়েছে। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামবাসী একজন সফল সেবক ও অভিভাবক থেকে বঞ্চিত হল।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে শুধু চট্টগ্রামের নয়; পুরো দেশের ক্ষতি হয়েছে। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন না, চট্টগ্রামবাসীর নেতা ছিলেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের বন্ধু ছিলেন। তিনি একজন মহিউদ্দিন চৌধুরী নন, একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি নতুন প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রশ্নে তিনি রাজনীতির ঊর্ধ্বে অবস্থান গ্রহণ করতেন। চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থরক্ষার আন্দোলনে তিনি সব সময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করতেন। চট্টগ্রামবাসীর প্রতি তার দরদ মানুষ আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের রাজনৈতিক গুরু। তার রাজনৈতিক কৌশল সারা দেশের জন্য অনুকরণীয়।
আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে দল, রাজনীতি ও দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার সততা নেতৃত্বের গুণাবলি, দেশপ্রেম, দলের প্রতি আনুগত্যতা সব রাজনীতিকের জন্যও অনুসরণীয়।
নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন বড়মাপের রাজনৈতিক নেতাকে হারিয়েছি আমরা। এমন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতার শূন্যতা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত। তিনি আপাদমস্তক চট্টলদরদী নেতা ছিলেন।
সংসদ সদস্য এমএ লতিফ বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী একজন অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অভিভাবক হিসেবে তিনি দলকে সুসংগঠিত করতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন।
১৬ ডসিম্বের২০১৭,শনিবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবি