ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:চট্টগ্রামের রিমা কমিউনিটি সেন্টারে মেজবানের আয়োজনে পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছে ১০ জন। চট্টগ্রামের সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের রীমা কমিউনিটি সেন্টারে মেজবানের আয়োজনে এই ঘটনা ঘটে। মি. চৌধুরীর কুলখানিতে চট্টগ্রামের ১৩টি কমিউনিটি সেন্টারে কুলখানির আয়োজন করা হয়েছিল। তার একটি ছিল এই রীমা কমিউনিটি সেন্টার।
দুপুর দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বহু আহত হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশংকা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে একটি কুলখানির অনুষ্ঠানে কেন ঘটলো এই দুর্ঘটনা? গত ১৫ই ডিসেম্বর মারা যান চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানি বেশ বড় করেই আয়োজন করা হয়েছিল। বাসায় দোয়া ও মিলাদের আয়োজন থাকলেও, কুলখানির আয়োজন করা হয়েছিল নগরটির ১৩টি কমিউনিটি সেন্টারে। মহিলাদের জন্য আয়োজন ছিল বাসায়।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, অমুসলিম ও যারা গোমাংস খান না, তাদের জন্যই এই কমিউনিটি সেন্টারটিতে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় চার হাজার ধারণ ক্ষমতা থাকলেও এই সেন্টারটিতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ অনুষ্ঠানে আসেন। যারা মারা গেছেন, তাদের সবাই অমুসলিম।
চট্টগ্রামের উপ পুলিশ কমিশনার মোস্তাইন হোসেন বলেন, এখানে কুড়ি জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেখানে কোন মারামারি বা বিশৃঙ্খলা হয়নি। হটাৎ করে মানুষের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় কয়েক মিনিটের মধ্যে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়।
সেখানে দায়িত্ব পালনকারী দমকল বিভাগের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, কমিউনিটি সেন্টারটি ছিল একটি ঠালু জায়গায়। হাজার হাজার মানুষ এখানে অংশ নিতে এসেছিলেন। খাবারের জন্য গেট খুলে দেয়ার সাথে সাথে পেছন থেকে প্রচণ্ড চাপ শুরু হয়ে যায়। তখন সামনে যারা ছিলেন, তাদের কয়েকজন পড়ে গিয়ে মারা যায়।
সামনে ঢালু জায়গা থাকা আর অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি মনে করেন।
আসকার দীঘির পাড় এলাকার এস এস খালেদ রোডের সামনে খানিকটা খোলা জায়গা নিয়ে দ্বিতল এই কমিউনিটি সেন্টারটি অবস্থিত। এর নীচ তলায় গাড়ি পার্কি, দোতলায় খাবারের ব্যবস্থা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে, অনেকটা হটাৎ করেই ঘটনাটি ঘটে যায়। গেট খুলে দেয়ার পর একসঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। প্রবেশ পথটি কিছুটা ঢালু হওয়ায় অনেকে পড়ে যান। তখনি এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে নয়জনকে সাথে সাথেই মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। আরো কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল খান সুমন বলেন, এই কমিউনিটি সেন্টারটির ধারণ ক্ষমতা রয়েছে তিন থেকে চার হাজার। কিন্তু এখানে ১০ হাজার মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। ফলে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।
আয়োজক এবং স্বেচ্ছাসেবীদের অনভিজ্ঞতা আর অব্যবস্থাপনাকেও তিনি এর জন্য দায়ী করেন। আহতদের মধ্যে অনেককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
https://youtu.be/F1vyvZrodd8
১৮ডিসেম্বর,২০১৭,সোমবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবি