জেরুসালেম প্রশ্নে ভারতের অবস্থান জানতে চেয়েছে সৌদিসহ এক ডজন আরব দেশ

 হারেৎজ : অন্তত ১ ডজন আরব দেশের রাষ্ট্রদূত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার ব্যাপারে ভারতের সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চেয়েছেন। এসব দেশের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব, কুয়েত ও মিসরও রয়েছে। এসব দেশের রাষ্ট্রদূত জেরুসালেম প্রশ্নে ভারতের শক্ত অবস্থান দাবি করেন।

দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে ইসরাইল মিডিয়া হারেৎজ এ খবর দিয়ে বলছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভারত সফরের আগে আরব দেশগুলো এ ধরনের ব্যাখ্যা চাইল।জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পর ভারত সরকার কোনো প্রতিবাদ করেনি। এ বিষয়টি দেশটিতেও বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রায়শঃ অভিযোগ তোলা হয় ভারত ও ইসরাইল মিলিতভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইসরাইল সফরের পর ফিলিস্তিন প্রশ্নে ভারত এক ধরনের নিরবতা পালন করে আসছে যা আরব দেশগুলোকে বিরাট প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক দশক ধরে জেরুসালেম নিয়ে অবস্থান উল্টে গেছে ট্রাম্পের এ ঘোষণায় এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দূতাবাসও জেরুসালেমে স্থানান্তরের কথা বলেছেন। এর প্রতিবাদ জানিয়েছে মার্কিন মিত্র ব্রিটেন, ফ্রান্স থেকে শুরু করে অধিকাংশ দেশ।

এদিকে গত সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে সৌদি আরব, মিসর ও কুয়েত সহ এক ডজন আরব দেশের কূটনীতিকরা এক বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরের কাছে আরব লীগ যে জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছেন সে সম্পর্কে ভারতের অবস্থান সরাসরি জানতে চান। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এর কোনো জবাব দেননি। আরব দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের কাছে কোনো কথাও দেননি। ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে জেরুসালেমকে আরো স্পষ্ট করে তুলে ধরতে ভারত সরকারের কোনো পরিকল্পনা ছিল না বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

ইসরাইলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রেখেও ভারত এক সময় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গন ও জাতিসংঘে জোরালো ভূমিকা রেখেছিল। তবে মোদি সরকারের সময় ইসরায়েলের সঙ্গে অনেক বেশি খোলামেলা সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। প্রযুক্তি, নিরাপত্তা ও অস্ত্র সহযোগিতাও দুটি দেশের মধ্যে অনেক গতি পেয়েছে। বিশেষ করে বিজেপি মনে করছে ইসলামি জঙ্গি প্রতিরোধে ভারত ও ইসরায়েলের এক সঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।

গত জুলাই মাসে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদি ইসরাইল সফর করেন। এবং মোদি সে সফরে ফিলিস্তিনি শহর রামাল্লায় না যাওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশ্লেষক পি আর কুমারস্বামী মনে করেন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এক পরিবর্তন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ভারত সফরে এলেও পূর্ব জেরুসালেমকে রাজধানী ঘোষণার কোনো তাগিদ অনুভব করেনি ভারত। দশকের পর দশক ফিলিস্তিনের সংগ্রামকে সমর্থন জানিয়ে আসলেও ভারত এখন ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চাইছে।

নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাই আরব দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাই জেরুসালেম প্রশ্নে ভারতের খোলাখুলি অবস্থান জানতে চান। তবে কোনো আশানুরুপ উত্তর তারা পাননি। জর্ডানে সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অনিল ত্রিগুণায়াত বলেন, তারা ভারতের কাছে জেরুসালেম নিয়ে মার্কিন অবস্থান সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে চেয়েছিলেন। হয়ত আশা করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের নিন্দা ভারত করবে।কিন্তু এব্যাপারে কারো কোনো বক্তব্য কি সত্যিই কোনো পার্থক্য সৃষ্টি করবে কি না তাও এই ভারতীয় কূটনীতিকের কাছে এক বড় প্রশ্ন।

২০ডিসেম্বর২০১৭,বুধবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/হারেৎজ /আসাবি

Check Also

সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।