ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেছেন, দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক ব্যাংকের আর্থিক হিসাবে সমস্যা রয়েছে।
ঠিকমতো হিসাবপত্র করলে দেশের অর্ধেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে অর্থনীতি সমিতির ২০তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হবে। এবারের সম্মেলনের প্রতিবাদ্য বিষয় অর্থশাস্ত্র ও নৈতিকতা। তিন দিনের এ সম্মেলনে ১০৫টি পেপার উপস্থাপন করবেন দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত অর্থনীতিবিদরা। এতে বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে পেশাদার অর্থনীতিবিদদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত, অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় নৈতিকতা, উন্নয়ন দর্শনে নৈতিকতা, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান নিরসনে নৈতিকতা, শিক্ষানীতিতে নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা হবে।
আবুল বারকাত বলেন, অনেক সাহস করে এ প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে। কারণ অর্থনীতির নৈতিকতা নিয়ে কথা বলা চ্যালেঞ্জিং কাজ। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঠিকমতো হিসাব করলে দেশের অর্ধেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে। তার মতে, প্রচলিত ব্যাংকিং করার জন্য এখন আর নতুন ব্যাংকের দরকার নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থনীতির জনক অ্যাডাম স্মিত বলেছেন, বাজার তার অদৃশ্য হাত দিয়ে সব ঠিক করে দেবে।
আবার তিনি এও বলেছেন, ব্যবসায়ীরা সামাজিক বা অন্য কোনো কারণে একত্র হলে বাড়ি ফেরার সময় পণ্যমূল্য বাড়ানোর কূটকৌশল সঙ্গে নিয়ে যান। আবুল বারকাত বলেন, বাংলাদেশের বাজারে স্মিতের দ্বিতীয় মত বেশি কাজ করছে। যে কারণে চাল বা পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা যায়। একইভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে নৈতিক বিনিয়োগের অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের যে ব্যয় বৃদ্ধি পায় তার একটা অংশ অনৈতিকভাবে বাড়ে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনীতি মূলত রাজনীতিনির্ভর। ব্যাংক দেয়া না দেয়ার সিদ্ধান্তও রাজনৈতিক। বাংলাদেশ ব্যাংক স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আইনও যুগোপযোগী নয়। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রাজধানীর কাকরাইল ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার অর্থনীতি সমিতির সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
বিশেষ অতিথি থাকবেন অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান। ২৩ ডিসেম্বর সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। সম্মেলনে ১২টি কর্ম অধিবেশনসহ সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।