সাতক্ষীরায় দপ্তরী নিয়োগে কয়েক কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্যের চেষ্টা

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃসাতক্ষীরার তালায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগে কয়েক কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ৮৩টি পদের বিপরীতে সহ¯্রাধীক প্রাথী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে। আবেদন কারীদের কাছ থেকে চাকুরি দেয়ার নাম করে ৮ থেকে ১২ লক্ষ করে টাকা পর্যন্ত ঘুষ দাবী করা হয়। প্রশাসন ও সরকারী দলের নেতা-কর্মীরা সরাসরি এসব ঘুষ দাবী করে। ফলে জেলা ব্যাপি তোড়পাড় শুরু হয়ে যায়। গত ৩০ নভেম্বর’১৭ তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
এদিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্ণিতির আশ্রায় নেয় হয়েছে মর্মে এক ব্যক্তি উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আজ বৃহস্পতিবার ২১ ডিসেম্বর’১৭ তারিখে ১৮৫৫৮ নং রিট পিটিশনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক শেখ হাসান আরিফ ও বিচারক বিশ্বদেব চক্রবর্তী এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। রিটে বিবাদি করা হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালা উপজেলা একাধিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, জনপ্রতিনিধি ও প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, তালা ইউএনও অফিসের দালাল হিসাবে পরিচিত পাওয়া এ শ্রেণির অসাংবাদিক নব্য সাংবাদিক নেতা, তালা ইউএনও নিজে বাদি হয়ে করা চাাঁদাবাজি মামলার এক আসামি, এক কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীসহ কয়েকজনের একটি চক্র এলাকার বহু প্রার্থীর নিকট থেকে নিয়োগ দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আদায়ও করেছেন।
উল্লেখ্য, তালা উপজেলার ৮৩টি স্কুলে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগের জন্য নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ০৫.৪৪.৮৭৯০.০০০.৩২.০১০.১৭-১৯২২ নং স্মারকে ৩০ নভেম্বর’১৭ তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার। বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার তারিখও নির্ধারণ করা হয়। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুযায়ী এসব নিয়োগের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সদস্য সচিব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং এমপি মনোনীত একজন ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনীত একজন ব্যক্তি। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে নিয়োগ কমিটির কোন বৈধ সভা অনুষ্ঠিত হয়নি যেখানে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনীত ব্যক্তিদ্বয় উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে এড়িয়ে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসার।
নিয়োগ কমিটির অন্য সদস্যরা বলছেন, কোটি কোটি টাকা অর্থ বাণিজ্যের কারণে ইউএনও সাহেব আমাদেরকে না জানিয়ে গোপনে মিটিং করে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। এতে করে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে উক্ত নিয়োগ অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিটপিটিশন দায়ের করলে উক্ত বিজ্ঞপ্তির উপর আজ বৃহস্পতিবার স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এবিষয়ে জানতে চাইলে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই জানিয়ে বলেন, “৬ সদস্যের নিয়োগ কমিটির প্রত্যককে ৩বার করে মিটিং এর চিঠি দেয় হয়েছে। কিন্তু যারা বলছেন তারা ইচ্ছে করেই আসেননি।” অর্থ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, “কমিটির প্রত্যেকের হাতে ২০ নম্বর সুতরাং আমার একার পক্ষে কাউকে অনিয়ম করে নিয়োগ দেয় সম্ভব নয়। আর আমার নাম করে কেউ অর্থ আদায় করলে তার দায় তো আমার নয়। আমি করি যারা এসব বলছেন তারাই অর্থ বাণিজ্য করছেন।

২১ডিসেম্বর২০১৭,বৃহস্পতিবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবি

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।