সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছে মুক্তা মনি (ভিডিও)

২২ডিসেম্বর,২০১৭ শুক্রুবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবিবাড়ি যাচ্ছে মুক্তামনি
দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি
মানসিকভাবে চাঙ্গা করতে মাস খানেকের ছুটিতে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে-ডাক্তার

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:: সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে মুক্তা মনি।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে প্রথম দফা চিকিৎসা গ্রহণ শেষে আজ সাতক্ষীরায় গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে মুক্তামনি।
চকিৎসকরা জনিয়েছেন, মাসখানেক ছুটি কাটিয়ে আবার হাসপাতালে ফিরে আসবে সে। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় ও ভোরে গাড়ি ঠিক করায় মুক্তার হাসপাতাল থেকে রিলিজ নেয়ার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা বৃহস্পতিবারই সম্পন্ন হয়েছে।
মুক্তামনির বাবা ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ‘ডাক্তাররা ওকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। তিনটা ওষুধ আর অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকাও দিয়েছেন। আল্লাহর ইচ্ছায় শুক্রবার (আজ) সকাল ৫-৬টার দিকে সাতক্ষীরার উদ্দেশে রওনা দিতে চাই। একমাস পর আবারও চেকআপের জন্য আসতে বলেছেন।’
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘মুক্তামনির চিকিৎসা শেষ হয়নি। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস ধরে হাসপাতালে থেকে থেকে সে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিল। তাকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করতে মাস খানেকের ছুটিতে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে।’
তিনি জানান, মা, বাবা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মুক্তামনিকে গ্রামের বাড়িতে পাঠাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব খরচে গাড়ি ভাড়া করে দিয়েছে। বাড়িতে অবস্থানকালে হাতের যতেœ কী করতে হবে, কোন ওষুধ কয় বেলা কিভাবে সেবন করতে হবে সে ব্যাপারে তার বাবা-মাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরার কামারবাইশালের মুদির দোকানদার ইব্রাহীম হোসেনের দুই যমজ মেয়ে হীরামনি ও মুক্তামনি। জন্মের দেড় বছর পর থেকে মুক্তামনির সমস্যা শুরু। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়।
ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে তা ফুলে কোলবালিশের মতো হয়ে যায়। মুক্তামনি বিছানায় বন্দি হয়ে পড়ে।
হাতে পুঁজ জমে থাকায় তা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ বের হতো। হীরামনি ছাড়া অন্য কোনো শিশু এমনকি বড়রাও কাছে ঘেঁষতেন না। মুক্তামনি এখন পর্যন্ত এক বছর তিন মাস বয়সী ছোট ভাইকে কোলে পর্যন্ত নিতে পারেনি।
সাতক্ষীরা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নানা চিকিৎসা চলে। তবে ভালো হয়নি বা ভালো হবে সে কথা কেউ কখনো বলেননি।
গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে খবর প্রকাশ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনায় আসে মুক্তামনির খবর। ১১ জুলাই মুক্তাকে ভর্তি করানো হয় বার্ন ইউনিটে।তার পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মুক্তামনির জন্য গঠিত আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড জানায়, মুক্তামনি বিরল রোগে আক্রান্ত।
রোগটির নাম ‘হাইপারকেরাটোসিস’। পরে মুক্তামনির কাগজপত্র সিঙ্গাপুরে পাঠান বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন।
ওই দেশের একটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথাও হয়। তবে সিঙ্গাপুরের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাদের পক্ষে এ ধরনের অপারেশন সম্ভব নয়।
শেষ পর্যন্ত ওই চ্যালেঞ্জই নেয় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিট। মুক্তামনির হাতে ১০ অক্টোবর প্রথম অস্ত্রোপচার হয়।

২২ডিসেম্বর,২০১৭ শুক্রুবার:ক্রাইমর্বাতাডটকম/প্রতিনিধি/আসাবি

Check Also

বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন

দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।