ঠাকুরগাঁও: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে গুমের রাজনীতি এর আগে আমরা দেখি নাই বলা যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকে রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে প্রোফেসনাল, ব্লগার তাদের অনেককেই গুম করে ফেলা হচ্ছে। গুম করে ফেলার পর তাদের আর কোনও সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে না। এ সরকার আসার পর থেকেই দেশে গুমের রাজনীতির প্রচলন হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার আয়োজনে শহরের আশ্রম পাড়ায় হাওলাদার কমিউনিটি সেন্টারে শনিবার এক বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জোর করে তুলে নিয়ে নিখোঁজ করা হয়, এটা মানবতার বিরুদ্ধে একটি ঘৃণ্য অপরাধ। জাতিসংঘে এটার একটি চার্টার রয়েছে। এটার চরম শাস্তি মৃত্যুদন্ড এবং অনেক দেশেই এর বাস্তবায়ন হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি মানবাধিকার সংস্থাগুলো একটি রিপোর্ট দিয়েছে যে, তিন মাসে গুম হয়েছে ১৫১জন। যার মধ্যে বড় ব্যবসায়ী, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, পত্রিকার সম্পাদক থেকে শুরু করে সাংবাদিককে পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। এদের মধ্যে কয়েকজনকে কিছুদিনেই ফেরত দেয়া হয়েছিলো। আর সেটা হয়েছে একটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এর বিরুদ্ধে সারাদেশে একটি আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো। বিশ্ব থেকে বিশেষ করে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে- এগুলো নিয়ে যখন খুব বেশি কথা হয়েছে, তখন কয়েকজনকে ফিরে আসতে দেখা গেলো।
ফখরুল আরো বলেন, আমাদের প্রশ্ন সেখানেই। কেন, কী জন্য, কী কারণে- এই ধরনের মানুষগুলোকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? একটাই মাত্র কারণ আমরা বলছি, সেটা হচ্ছে সরকারের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করা। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যারাই ভিন্ন মত প্রকাশ করবে, তাদেরই গুম করা হবে।
এ সময় অন্যদের মাধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান তৈমুর রহমান, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন লাল প্রমুখ।
——————0————–
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু ক্ষমতায় টিকে থাকার চিন্তায় সরকার তার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
শনিবার জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে পিরোজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর জাতীয় পার্টিতে যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে রুস্তম আলী ফরাজী জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন।এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, মেজর অব. খালেদ আখতার, নুরুল ইসলাম নুরু, ইয়াহিয়া চৌধুরী এমপি, ইসহাক ভূইয়া, ফখরুল আহসান শাহাজাদা প্রমুখ।
এরশাদ বলেন, গুম খুন ধর্ষণ ও দুর্নীতির চিত্র দেখলে মনে হয় দেশে সরকার নেই। এ থেকে রক্ষা পেতে রংপুর সিটি নির্বাচনের মতোই ভবিষ্যতের সব নির্বাচনেই দেশবাসী লাঙ্গলের ওপর আস্থা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রভাব আগামী জাতীয় নির্বাচনেও পড়বে। কারণ সরকারের পরিবর্তন চায়। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তা প্রমাণিত হয়েছে।
ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামে। তিনি ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের মঠবাড়িয়া উপজেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। পরে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ’৬৯ সালে এগারো দফা আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। ৭১ সালে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মঠবাড়িয়ার আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৮ সালে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন।
তিনি ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালে তিনি বিএনপি থেকে নির্বাচন করে পিরোজপুর-৩-এর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।