ডোমার (নীলফামারী) থেকে তোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, রাজা ছুটিতে গেছে আর তার কর্মকর্তা কর্মচারী পাইক পেয়াদা চাপরাশি পিয়ন সবাই প্রশাসনিক ঘরের দরজা খুলে দিয়ে যে যার মত যা ইচ্ছা তাই করছে। গ্রাম বাংলার এই প্রবাদ বাক্যটি আজ চিলাহাটি সরকারী ডিগ্রী কলেজের সঙ্গে শতভাগ মিল হয়েছে। চিলাহাটি ডিগ্রী কলেজটি আজ বেহাল দশা ও দূরবস্থার শেষ নেই। প্রশাসনের কর্মকর্তা যিনি এই কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর কাদের মোল্লা, তিনি দিনের পর দিন বিনা কারনে অনুপস্থিত থেকে ৮৭,৫০০/= টাকা মাসিক বেতন তুলে আরাম আয়েসে জীবন যাপন করছে। আর চিলাহাটি কলেজের ৭০০ জন ছাত্র-ছাত্রী দিনের পর দিন ক্লাশ বিহীন পড়াশুনা বিহীন কলেজ যাওয়া আসা করছে। ১৯৮৭ সালে কলেজটি সরকারীকরন হওয়ার পর পড়াশুনার মান ও প্রশাসনিক কার্য্যক্রম ও নিয়ম নীতির চরম লঙ্ঘন ঘটে। কলেজটিতে যে যার ইচ্ছা মত উপস্থিত ও অনুপস্থিত থাকে। নতুন শিক্ষকরা চাকরি যোগদান করে ২/৩ মাস পর, কে কিভাবে বদলি নিয়ে চলে যায় তা কেউ বলতে পারেনা। কেউ আবার মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকে আরাম আয়েসে চাকরি করে যাচ্ছে। এইসব ঘটনা অধ্যক্ষ সাহেব দেখেন না ।
যিনি ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করেন তিনিও ঠিক মত কলেজে আসেন না বা দায়িত্ব পালন করেন না। একজন অবিভাবক আক্ষেপ করে বললেন যে, ছেলেটাকে কলেজ ভর্তি করেছি ২ বছর হল এবার সে এইচএসসি পরিক্ষার্থী, ফরম ফিলাপ করলো, অথচ আমার মনে হয় সে পাস করতে পারবেনা। মাসে ১০ টি ক্লাশ সে করতে পারেনি, কার কাছে বিচার দিবো, অধ্যক্ষ সাহেব মাসে ২ থেকে ৪ দিন কলেজে উপস্থিত থাকেন, সরকারী নিয়ম অপেক্ষা করে শুধু অধ্যক্ষ নয় প্রভাশকরা যে যার মত ক্লাশ চালায়, মন চাইলে ক্লাশ করায় না চাইলে বাড়ী চলে যায়।
কয়েক জন ছাত্র-ছাত্রী সাংবাদিকের নিকট অভিযোগ করেন যে, সমাজ-বিজ্ঞান শিক্ষক ও ইংরেজি শিক্ষক ক্লাশের মধ্যে দূরব্যাবহার করে এবং অনাদের নিকট প্রশ্ন করলে সঠিক জবাব তো দেয়না উপরন্ত আমাদেরকে গালাগালী করে। দুপুর একটার পর কলেজে কাউকে পাওয়া যায়না, অধ্যক্ষের রুমে সবসময় তালা ঝুলে থাকে। কর্মচারী বৃন্দকে প্রশ্ন করলে কেউ কিছু উত্তর দিতে চায়না। এখন এইসএসসি ফরম ফিলাপ চলছে, কিন্তু অধ্যক্ষ সাহেব অনুপস্থিত, মানবিক, বানিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের ফরম ফিলাপের জন্য কত টাকা লাগবে, সে হিসাব অধ্যক্ষ সাহেব অফিসে লিখে দিয়ে চলে গেছে। গরীব ছাত্র-ছাত্রীরা ফরম ফিলাপের জন্য টাকা মত্তকুফ করার আবেদন জানাবে বলে কোন উপায় নেই। চিলাহাটি কলেজটি গত দুই বছর ধরে এভাবেই চলছে। কলেজটিতে গেলেই মনে হয়না, যে এটা কলেজ, নেই ছাত্র-ছাত্রীর কলাহল, নেই কোন ক্লাশ, নেই কোন প্রভাশক, নেই অফিস কর্মচারী, নেই অধ্যক্ষ। কলেজে একটি মহিলাদের জন্য হোষ্টেল রয়েছে কিন্তু সেটি প্রভাশকরা দখল করে নিয়েছে, তারা প্রতি মাসে অধ্যক্ষ সাহেবকে ৯০০ টাকা মাসেহারা দেয়। কিন্তু প্রভাশকদের হোষ্টেলে থাকার কোন নিয়ম নেই।
সাংবাদিক কলেজে গেলে, অধ্যক্ষ সাহেব নাকি তার অনুগত প্রভাশক ও অফিস কর্মচারীদের সামনে ব্যঙ্গ করে বলেন যে, সাংবাদিকরা আমার বিরুদ্ধে লিখলে আমার ভালো হয়। একই কথা বলেছেন প্রভাশকবৃন্দ যে সাংবাদিক লিখলে আমরা তাড়াতাড়ী বদলি হতে পারবো কিন্তু কোন সাংবাদিক লিখে আমাদের বদলি করাতে পারলোনা। যে সাংবাদিক আমাদের বিরুদ্ধে লিখে বদলি করাতে পারবে তাকে আমরা পুরু®ৃ‹ত করবো।
Check Also
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …