ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাংলাদেশের আগামী দিনের পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে ইউরোপের সঙ্গে গভীরতর সম্পর্ক, নিকট প্রতিবেশীদের গুরুত্ব প্রদান, ব্লু ইকোনমি ও আঞ্চলি যোগাযোগসহ ৮ দফা অগ্রাধিকারের উল্লেখ করেছেন। তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। তবু আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতিতে অটল রয়েছি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির গতিধারার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। পরিবর্তনের এই ধারা অনুধাবন করতে আমাদের ২০১৭ সালের ঘটনাবলীর মূল্যায়নের এটাই যথার্থ সময়।
মন্ত্রী আজ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত প্রতিষ্ঠানটির মিলনায়তনে ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন।
এই পরিবর্তন সম্পর্কে মাহমুদ আলী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে। এদিকে ব্যক্তি প্রভাব ও অ-রাষ্ট্রীয় খাত বিভিন্ন দেশে সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রাধান্য বিস্তার করছে। ব্যবসা ও অর্থনীতির জন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সরাসরি যোগাযোগ রাষ্ট্রীয় সীমারেখার পুনঃসংজ্ঞায়িত করছে। এজন্য অনেকে চলমান এই ভু-রাজনৈতিক পরিবর্তনকে রূপান্তরমূলক হিসেবে উল্লেখ করছেন।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে তার শান্তি কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আঞ্চলিক সংহতি ও যোগাযোগকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়ন কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে হবে।
৮ দফা অগ্রাধিকারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী থেকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসের ভিত্তিতে ভারত আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এটাই হচ্ছে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুপ্রতিবেশীসুলভ নীতি। মিয়ানমারের সঙ্গে বর্তমান সংকটপূর্ণ সময়েও বাংলাদেশ এই বন্ধুত্ব ও সুপ্রতিবেশীসুলভ নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। তবু আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতিতে অটল রয়েছি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।
এছাড়া ৮ দফা অগ্রাধিকারে রয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বাস্তবায়ন ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে অগ্রণী ভূমিকা বজায় রাখা।
মন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১’র পথ নির্দেশনার আওতায় আমরা আমাদের পররাষ্ট্র নীতির ভিশন ও কৌশল বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আবদুর রহমান অন্যান্যের মধ্যে সেমিনারে বক্তৃতা করেন।
মেজর জেনারেল আবদুর রহমান বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে অব্যাহত চাপ সৃষ্টি করছে। একই সঙ্গে বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশ সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
০৯জানুয়ারী,২০১৮মঙ্গলবার:::ক্রাইমর্বাতা.কম/বাসস/আসাবি