প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দেশকে সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে : ফখরুল

ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে একাদশ নির্বাচন নিয়ে সমঝোতার কোনো ইঙ্গিত না থাকায় জাতি হতাশ হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভাষণের পর গত রাতে সাংবাদিকদের এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমঝোতার কোনো ইঙ্গিত আমরা দেখতে পেলাম না। তার বক্তব্যে সঙ্কট নিরসনের কোনো পথ খুঁজে পাইনি। যার ফলে আমি বলছি, এ বিষয়টা একটা বড় হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমরা মনে করি, তার বক্তব্য সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেনি বরং দেশকে আরেক দফা সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে নিঃসন্দেহে।
‘জাতির হতাশা’র কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবাই ভাবছিল দেশে যে একটা রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল, দেশের মানুষ যে অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে পড়েছে, আশঙ্কা-অস্বস্তির মধ্যে তারা দিন কাটাচ্ছে সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে একটি সুন্দর সমাপনীর কথা বলবেন। কিভাবে সামনের নির্বাচন অর্থবহ করা যায় এবং বিরাজমান সঙ্কট থেকে উত্তরণ ঘটানো যায় তার ব্যবস্থা তিনি করবেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তার বক্তব্য সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেনি, এতে জাতি হতাশ হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এ দেশের মানুষ কখনো অন্যায়কে সহ্য করবে না। তারা সত্যিকার অর্থে একটা অর্থবহ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়।

২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সাথে সত্যতার খুব একটা সম্পর্ক নেই। জাতি জানে ২০১৪ সালের নির্বাচনে যে ভোট হয়েছিল তাতে ৫% ভোট পড়েছিল।

এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে জনগণ অপো করছে, আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সব দলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন এখন সম্ভব হচ্ছে না। তা জনগণকে আশাহত করেছে।
উন্নয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি উন্নয়নের বিষয়ে একটা ফিরিস্তি দিয়েছেন এবং সেই সাথে বলেছেন, উন্নয়নের মহাসড়কে অগ্রযাত্রা। আমরা সেটাকে মনে করি, দুর্নীতির মহাসড়কে তাদের অগ্রযাত্রা। উন্নয়নের যে কথা তারা বলছেন, সেখানে দুর্নীতি সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে।
নৈরাজ্য সৃষ্টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিছুটা হুমকির সুরে বলেছেন, কোনো রকম নৈরাজ্য সহ্য করা হবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- নৈরাজ্য বিরোধী দল সৃষ্টি করে না। নৈরাজ্য তারাই সৃষ্টি করে যাতে নির্বাচন ব্যাহত হয়। আজকে যখন গোটা জাতি অপো করছে, সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক- তখন তার এই বক্তব্য তাকে তিগ্রস্ত করেছে।

বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবিধানমাফিক যে নির্বাচনের কথা বলছেন, সেই সংবিধান কাদের সংবিধান, কারা এই সংবিধান তৈরি করেছে, কাদেরকে নিয়ে এই সংবিধান তৈরি হয়েছে। এখানে জনগণের আশা-আকাক্সার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। যে ব্যবস্থাটা জনগণ মেনে নিয়েছিল আগে একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সেই বিধানটা একতরফাভাবে বাতিল করে তারা একটা সঙ্কট তৈরি করেছেন, যা জাতির জন্য অত্যন্ত তিকর বলে আমরা মনে করি।

মির্জা ফখরুল জানান,  গতকাল শনিবার বিকেলে গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া দেয়ার সময়ে চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা: সাহাদাত হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য অপর্ণা রায় দাশ, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

১৩জানুয়ারী,২০১৮শনিবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি

Check Also

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।